বিবিসি’র ‘মোদী তথ্যচিত্র’ প্রদর্শনে যুক্ত থাকার দায়ে দুই পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসতে দিল না দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি, দুই শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য ‘সাসপেন্ড’ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (PTI) জানিয়েছে, গত ২৭ জানুয়ারি, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট ফ্যাকাল্টি ভবনের বাইরে বিবিসি (BBC)-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন' (India: The Modi Question) প্রদর্শন করেছিল এক দল ছাত্র। আর, এই প্রদর্শনীতে সহায়তা করার অভিযোগে দুই পড়ুয়াকে ‘সাসপেন্ড’ ঘোষণা করেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। এঁরা হলেন জাতীয় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ‘NSUI’-র ন্যাশনাল সেক্রেটারি ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের গবেষক পড়ুয়া লোকেশ চুগ (Lokesh Chugh) এবং দ্বিতীয় জন হলেন আইনের পড়ুয়া রবিন্দর।
পিটিআই জানিয়েছে, এ নিয়ে গত ১০ মার্চের একটি স্মারকলিপি (memorandum) প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে তাঁরা ‘স্মারক ইস্যুর তারিখ থেকে এক বছরের জন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ বা বিভাগীয় পরীক্ষা বা পরীক্ষায়’ অংশ নিতে পারবেন না।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, ২৭ জানুয়ারির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৬ জন ছাত্রকে ‘কম কঠোর’ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আগামীতে এই সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে ছয় শিক্ষার্থীকে কী শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
পিটিআই-কে তিনি বলেন, ‘আমরা দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছি এবং ছয় শিক্ষার্থীকে কম কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবককেও ডেকেছি। আগামী দিনে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।’
স্মারকলিপিতে বিবিসি’র 'ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন'-কে ‘নিষিদ্ধ’ বলে দাবি করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, ‘…নিষিদ্ধ বিবিসি ডকুমেন্টারি প্রদর্শনে অংশগ্রহণ করে শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজ করেছে লোকেশ চুগ।’
টুইটারে লোকেশ চুগ জানিয়েছেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের খুন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে রাস্তায়, পরে সংসদে আর,এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভিডিও (তথ্যচিত্রটি) নিষিদ্ধ নয়, ব্লক করা হয়েছে। বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন। এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু, আমাকে অপরাধী ঘোষণা করে শাস্তি দেয়া হয়েছে।’
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি, গুজরাট গণহত্যায় রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা তুলে ধরে 'দ্য মোদী কোয়েশ্চেন-১' নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম BBC। যদিও, বিবিসি’র এই তথ্যচিত্রের ভিডিও লিঙ্কগুলি ইউটিউব এবং টুইটার সরানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার।
পরে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দিলেও সেই তথ্যচিত্র প্রদর্শনী করে কয়েকজন পড়ুয়া। তারই ‘অপরাধে কঠোর শাস্তি’ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন