মরসুমের দূষিততম দিনের সাক্ষী থাকল দিল্লি। বাতাসের গুণগত মান বা AQI অতি-ভয়ঙ্কয় রূপ নিয়েছে। দৃশ্যমানতা একেবারে নেই বললেই চলে। ব্যাহত হয়েছে বিমান পরিষেবাও। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে দিল্লি সরকার।
গত কয়েকদিন ধরেই দিল্লির আকাশ ধোঁয়ার চাদরে ঢাকা পড়ছিল। সোমবার তা চরমে উঠেছে। রাজধানীর AQI আজ সকাল ৭টায় ৪৮১ পরিমাপ করা হয়। যা অতি ভয়ঙ্কর হিসেবে বিবেচিত হয়। সকাল ৯টায় যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪৮৫-তে। রাজধানীর দৃশ্যমানতা একদম কমে গেছে। ১৫০ মিটার দূরে থাকা কোনো বস্তুকেও দেখা যাচ্ছে না।
ধোঁয়াশার কারণে ব্যাহত হয়েছে বিমান পরিষেবাও। বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর পক্ষ থেকে বেলার দিকে যাত্রীদের জানানো হয়, 'কুয়াশা দিল্লির দৃশ্যমানতাকে প্রভাবিত করছে, যার ফলে ট্রাফিক ধীরগতিতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ফ্লাইটের সময় বিলম্বিত হতে পারে'। যাত্রী সুবিধার্থে একটি লিঙ্কও দিয়েছে ইন্ডিগো। যেখানে কোন বিমান কোন সময়ে চলছে তা জানতে পারবেন।
অতিরিক্ত দূষণের কারণেই দিল্লির আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি। এই অবস্থায় একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে দিল্লি সরকার। দিল্লি এনসিআর 'গ্র্যাপ' বা Graded Response Action Plan (GRAP) চালু করেছে। এই প্ল্যানের ৪টি পর্যায় আছে। ইতিমধ্যেই ৩টি পর্যায় কার্যকর হয়েছে। গ্র্যাপ ৪ ও চালু করার দিকেই এগোচ্ছে সরকার।
বাতাসের গুণমান 'খারাপ' (২০১ থেকে ৩০০) হলে গ্র্যাপ ১, 'খুব খারাপ' (৩০১ থেকে ৪০০) হলে গ্র্যাপ ২ এবং 'ভয়ঙ্কর' (৪০১ থেকে ৪৫০) হলে গ্র্যাপ ৩ চালু করা হয়। গ্র্যাপ ৪ চালু হয় বাতাসের গুণমান ৪৫০-র অধিক হলে।
গ্র্যাপ ৪-এর অধীনে প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া কোনো ভারী গাড়ি দিল্লিতে প্রবেশ করতে পারবে না অথবা এলএনজি, সিএনজি, বিএস VI ডিজেল এবং ইলেক্ট্রিক যানবহনে ছাড় থাকবে। দিল্লির বাইরের রেজিস্ট্রেশন করা কর্মাশিয়াল গাড়ি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে ইলেক্ট্রিক বা সিএনজি চালিত গাড়িতে ছাড় রয়েছে। এছাড়া জাতীয় সড়ক, ফ্লাইওভার, বৈদ্যুতিন লাইন, পাইপলাইন এবং অন্যান্য সকল নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি ছাড়া সমস্ত ক্লাসের পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি অফিসগুলিতে ৫০ শতাংশ কর্মীর উপস্থিতি নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ কর্মীকে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' করতে হবে।
উল্লেখ্য, AQI ০-৫০ হলে তা 'ভালো' হিসেবে বিবেচনা হবে। ৫১ থেকে ১০০ হচ্ছে 'সন্তোষজনক'। ১০১ থেকে ২০০ হল 'মাঝারি', ২০১ থেকে ৩০০ হল 'খারাপ', ৩০১ থেকে ৪০০ হল 'খুব খারাপ', ৪০১ থেকে ৪৫০ হল 'ভয়ঙ্কর' এবং ৪৫১-র অধিক AQI 'অতি ভয়ঙ্কর' হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন