বাড়ির উপর বুলডোজার চালানো নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি। এবার থেকে অবৈধ বলেই কোনও বাড়ি ভেঙে ফেলা যাবে না বলে জানিয়ে দিলেন তাঁরা।
মামলাটির শুনানি ছিল বিচারপইতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে। যেখানে বুলডোজার দিয়ে 'অবৈধ' নির্মাণ ভেঙে ফেলার নিন্দা জানায় দুই বিচারপতির বেঞ্চ। দুই বিচারপতি জানান, বাড়ির যে অংশটি অবৈধ শুধুমাত্র সেই অংশটি ভাঙা উচিত। তার বদলে অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে পুরো কাঠামোটিকেই ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এর অনুমতি আমাদের সংবিধান দেয় না। অবশ্যই নিয়ম মেনে ভাঙার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
বিচারপতি গাভাই বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির একটি স্বপ্ন থাকে যে তাঁরা নিজের বাড়িতে থাকবেন। একটি বাড়ি হল পরিবারের বা ব্যক্তির স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার মূর্ত প্রতীক। প্রশাসনিক কর্তারা কি এইভাবে নির্দেশ দিতে পারেন? তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এইভাবে কে অপরাধী আর কে অপরাধী নন তা একজন আধিকারিক ঠিক করতে পারেন না। তাঁকে সেই ক্ষমতা প্রদান করা হয়নি। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া যাবে না। প্রথমে শোকজ নোটিশ দিতে হবে। নোটিশ পাঠিয়ে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় দিতে হবে। পরে বিষয়টি জানাতে হবে জেলাশাসককে। জেলাশাসকের নিয়োগ করা নোডাল অফিসার বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন।
পাশাপাশি বিচারপতি গাভাই বলেন, আমরা বাসস্থানের অধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেছি। সংবিধানের ১৯ এবং ২১তম অনুচ্ছেদেও এর উল্লেখ রয়েছে। বাসস্থানের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। এই ধরনের অধিকার থেকে নিরপরাধ মানুষদের বঞ্চিত করা অসাংবিধানিক।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি মনোজ মিশ্র এবং বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালার বেঞ্চে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙা মামলায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিল। তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলে, 'বিনা নোটিশে বাড়ি ভেঙে ফেলা সত্যিই চিন্তার বিষয়। মামলায় স্পষ্ট যে প্রশাসনিক কর্তার নির্দেশ ছাড়াই বাড়িটি ভাঙা হয়েছে। মামলাকারী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি ভেঙে ফেলার একমাত্র কারণ হল সংবাদপত্রে সড়ক নির্মাণে বেনিয়ম তুলে ধরেছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্র এই ধরণের কাজ কখনই করতে পারে না।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন