নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্ট মান্যতা দিয়েছে বলে যে খবর প্রচারিত হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। সোমবার, দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক বিবৃতিতে জানান, ‘২০১৬-র ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে আরবিআই আইনের ১৯৩৪-এর ২৬(২) ধারা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল কিনা, তা নিয়ে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর থেকে কমও কিছু নয়, আবার বেশিও কিছু নয়।’
এছাড়া, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সংসদকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত হয়নি বলে জানিয়েছেন বিচারপতি বি ভি নাগারথানা, সেকথাও এদিন উল্লেখ করেছেন রমেশ।
তিনি জানান, ‘অন্যান্য বিচারপতিদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে এক বিচারপতি জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর, বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পুরনো ১০০০ টাকা এবং ৫০০ টাকার নোট বাতিলের পদক্ষেপটি ‘বেআইনি’ ছিল। নিজস্ব মতামতে তিনি বলেছেন, সংসদকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত হয়নি।’
বিবৃতিতে কংগ্রেস নেতা রমেশ দাবি করেন, ‘কোর্টের রায়ে নোট বাতিলের প্রভাব সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। যেটি একক বিপর্যয়কারী একটি সিদ্ধান্ত ছিল। যে সিদ্ধান্ত দেশের আর্থিক বৃদ্ধির গতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পকে পঙ্গু করেছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রকে শেষ করে দিয়েছে, লক্ষ লক্ষ জীবন-জীবিকা ধ্বংস করেছে।’
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা আইনজীবী পি চিদাম্বরম, যিনি নোট বাতিলের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। তিনি এদিন জানান, ‘এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে সংখ্যাগরিষ্ঠরা সিদ্ধান্তের প্রজ্ঞাকে সমর্থন করেননি।’
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিরা নোটবন্দির উদ্দেশ্যগুলি আদৌ অর্জিত হয়েছিল কিনা, তা পরিষ্কার করেছেন। এই রায় বিরোধিতা পূর্ণ। যা সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ ভিন্নমতের মধ্যে স্থান পাবে।’
চিদাম্বরম বলেন, ‘আমরা খুশি যে এক বিচাপতি নোট বাতিলের বেআইনি দিক এবং অনিয়মগুলি তুলে ধরেছেন। এটি সরকারের পিঠে একটি চপেটাঘাত হতে পারে।’
তিনি জানান, ‘আমরা খুশি যে সংখ্যালঘু এক বিচারপতির রায় - গণতন্ত্রে সংসদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দিয়েছে। আমরা আশা করি, আগামীতে সংসদকে এড়িয়ে জনগণের উপর কোনও বিপর্যয়কর সিদ্ধান্তে চাপিয়ে দেবে না সরকার।’
এদিকে, বিচারপতি নাগরথনার ভিন্নমতের প্রশংসা করেছেন শিবসেনা নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘নোট বাতিলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কথা বলার জন্য বিচারপতি বিভি নাগারথনার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা বেড়ে গেলো।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন