জয়পুর জেলায় একটি দলিত পরিবারের বিয়ের অনুষ্ঠানে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগে দশ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে, যখন ঘোড়ায় চড়ে এক দলিত যুবক জয়পুর জেলার পাওতার কাইরোদি গ্রামে কনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। কনের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা দিতে মোতায়েন পুলিশ থাকা সত্ত্বেও পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে।
কনের বাবা হরিপাল বালাইয়ের কথায়, “আমাদের গ্রামে দলিতরা ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যেতে পারে না সাধারণত। আমি এই অনৈতিক ঐতিহ্যকে ভাঙতে চেয়েছিলাম। আমার মেয়ে ও ছেলে দুজনেরই বিয়ে হচ্ছে এই মাসেই। গ্রামের রাজপুত সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রায়ই বলে যে তারা আমাদের ঘোড়ায় চড়তে দেবে না। আমি সন্দেহ করেছিলাম যে বিরোধিতা হতে পারে। তাই সুরক্ষার জন্য পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জমা দিয়েছিলাম।”
তিনি আরও বলেন – “পুলিশ কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনীতিবিদরা বৃহস্পতিবার সকালে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।” আক্ষেপের সুরে বলেন – “মনে আছে প্রায় চল্লিশ বছর আগের একটি ঘটনা, যখন আমি ছোট ছিলাম। যেখানে দলিতদের মিছিলে পাথর ছোড়া হয়েছিল। গতকাল সন্ধ্যায় আমি আবারও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখলাম। পুলিশের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও আমার জামাই ঘোড়ায় চড়ে আমাদের বাড়ির গেটে পৌঁছানোর পরেই পাথর ছোঁড়া হল। আমাদের পরিবারের ১০-১৫ জন লোক আহত হয়েছেন। যারা পাথর ছুড়েছে তারা রাজপুত সম্প্রদায়ের এবং বেশিরভাগই আমার প্রতিবেশী।”
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার আগে ঝোপের আড়ালে পাথর ছুঁড়ছিল। তাঁর কথায় – “পাথর ছোঁড়া হয়েছে কারণ তারা দলিতদের ঘোড়ায় চড়া সহ্য করতে পারে না”। এই ঘটনায় পুলিশ রাজপুত সম্প্রদায়ের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
কোটপুটলির সার্কেল অফিসার দিনেশ কুমার যাদব জানিয়েছেন – “আমরা রাজপুত সম্প্রদায়ের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। ঘটনাস্থলে ৭৫ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আক্রমণটি আকস্মিক ছিল, মাত্র কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল। তারপর আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায়। আহত হয়েছেন তিন জন। মোট ১৮ জনের নামে এফআইআর করা হয়েছে।” অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এসসি/এসটি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের ধারা সহ আইপিসি ৩২৩ ও ৩৪১ নং ধারা লাগু করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন