সনাতনের যে নীতি জাতি ও মহিলাদের মধ্যে বৈষম্য করে তার বিরুদ্ধে বলেছে উদয়নিধি, ছেলের পাশেই স্ট্যালিন

ছেলের সমর্থনে এবার মুখ খুললেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে সুপ্রিমো এমকে স্ট্যালিন। সনাতন ধর্মকে নিয়ে তামিলনাড়ুর ক্রীড়ামন্ত্রী উধয়নিধি স্ট্যালিনের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তপ্ত দেশীয় রাজনীতির একাংশ। বৃহস্পতিবার ছেলের হয়ে সাফাই দিতে গিয়ে একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে ‘সিনিয়র’ স্ট্যালিন জানান, “সনাতনে প্রচারিত যে নীতিগুলি সমাজে জাতি, উপজাতি ও মহিলাদের মধ্যে বৈষম্য করে সেই নীতি সম্বন্ধেই কথা বলেছেন উনি (উধয়নিধি)। কোনও ধর্ম বা ধার্মিক বিশ্বাসকে আঘাত করার কোনও অভিপ্রায় তার ছিল না।”

কয়েকদিন আগেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের ছেলে উদয়নিধি স্ট্যালিন সনাতন ধর্মকে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, “সনাতন ধর্ম সামাজিক বিচারের ধারণার বিরোধী এবং একে অবিলম্বে দেশ থেকে নির্মূল করে দেওয়া উচিত।” উদয়নিধির এই মন্তব্যকে বিজেপিপন্থীরা তীব্র আক্রমণ করেছেন। রাজস্থানের এক দলীয় সমাবেশ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, “সনাতন ধর্ম নিয়ে ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনের পুত্রের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে বিরোধী ইন্ডিয়া শিবির হিন্দুত্বকে ঘৃণা করে এবং এটা আমাদের ঐতিহ্যের উপর আক্রমণ।”

সেই বিতর্ক নিয়েই এবার ছেলের পক্ষ নিয়ে এমকে স্ট্যালিন বলেন, “একদল মানুষ আছেন যারা এখনও জাতিগত বৈষম্যকে প্রচার করেন আর মহিলাদের অসম্মান করেন। আর সেই সনাতন নিয়ে প্রচারিত ভুল তথ্য সম্পর্কে মন্ত্রীর (উধয়নিধি) মন্তব্য বিজেপিপন্থী শক্তিদের একদম পছন্দ হয়নি।” এদিন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আমরা চাঁদে পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম, কিন্তু এখনও কিছু মানুষ জাতি নিয়ে ভেদাভেদকে প্রচার করেন।”

তিনি আরও জানান, “বর্ণাশ্রম নীতির উপর ভিত্তি করে সামাজিক স্তরবিন্যাসের উপর জোর দেওয়া এবং সাম্প্রদায়িকতাকে সমর্থন করার জন্য শাস্ত্র ও অন্যান্য প্রাচীন গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি প্রচার করা হয়। সনাতনের নামে ‘মেয়েদের চাকরি করতে নেই বা বিধবা মহিলাদের আবার বিয়ে করতে নেই’ বলে কিছু মানুষ এখনও মহিলাদের অসম্মান করেন।”

যদিও নিজের মন্তব্যে অনড় উদয়নিধি। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “TNPWAA কনফারেন্সে আমার করা মন্তব্যকে বিকৃত করে ‘গণহত্যায় উস্কানিমূলক’ মন্তব্য বলে প্রচার করছেন বিজেপি নেতারা। নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য ওরা এখন ওটাকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। মোদী অ্যান্ড কোং সংসদীয় নির্বাচনে জয়ের জন্য এইসব অপবাদ ছড়ানোর উপরেই নির্ভরশীল।”