‘ন্যায় বিচার’ চেয়ে দিল্লি পুলিশের আক্রমণের মুখে পড়লেন প্রতিবাদী কুস্তিগীররা। এই ঘটনায় কার্যত হতবাক হতবাক দেশবাসী।
যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (WFI) সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং-এর গ্রেফতারির দাবীতে দিল্লির যন্তর মন্তরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের খ্যাতনামা কুস্তিগীররা। বুধবার রাতে, সেই বিক্ষোভস্থলে চড়াও হয় দিল্লি পুলিশ। কুস্তিগীরদের সঙ্গে বচসা, এমনকি হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়ে পুলিশ বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভকারী কুস্তিগীরদের অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন দিল্লি পুলিশ কর্মীরা। বুধবার রাতে তাঁরা আচমকাই এসে আন্দোলনকারীদের ধাক্কা দিয়ে সরাতে শুরু করে। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। তাঁদের দাবি, এতে দুই আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। এক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
আন্দোলনকারী কুস্তিগীররাদের অন্যতম মুখ ভিনেশ ফোগট সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সারা দিন বৃষ্টি হওয়ার ফলে মাটি ভিজে থাকায় আমরা বিক্ষোভস্থলে খাট পাতার চেষ্টা করছিলাম। তখনই পুলিশ আমাদের উপর হামলা করে। একজনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন না। এই সময় ধাক্কধাক্কিতে কেউ কেউ মাথাতেও আঘাত পান।’
এর পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগীর ভিনেশ (Vinesh Phogat)। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আমরা কোনও দাগি আসামি নই যে পুলিশ আমাদের সঙ্গে এরকম আচরণ করবে। এই দিনটি দেখার জন্যই কি আমরা দেশের হয়ে এত পদক জিতলাম?’
বুধবার সকালেই যৌন হেনস্তা ইস্যুতে (MeToo) কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের বিরুদ্ধে সরব হন ভিনেশ ফোগট (Vinesh Phogat)।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘(গত জানুয়ারি মাসে) কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রীর (অনুরাগ ঠাকুর) সাথে কথা বলার পরই আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলাম। সমস্ত ক্রীড়াবিদরাই তাঁকে যৌন হয়রানির কথা বলেছিলেন। বরং একটি কমিটি গঠন করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। সে সময় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
আর, সেই অভিযোগের কয়েক ঘন্টা পরেই, প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের উপর দিল্লি পুলিশ আক্রমণ চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, যৌন হেনস্থার অভিযোগে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের গ্রেফতারি চেয়ে ২৩ এপ্রিল থেকে অবস্থানে বসেছেন কুস্তিগীররা। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে দিল্লির যন্তর মন্তরে এসেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কেজরিওয়াল বলেছিলেন, 'যে কুস্তিগীররা আমাদের দেশকে গর্বিত করেছেন, তাঁরা বিগত এক সপ্তাহ ধরে যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের অপমান করা হয়েছে। যে বা যারা মহিলাদের সম্মান করেন না, তাদের হেনস্থা করেন, তাঁদের ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন