যে কোনো সুষ্ঠু তদন্ত অবশ্যই যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসন অনুসারে করা উচিৎ। সাংবাদিকতাকে অপরাধীকরণের উদ্দেশ্য পূরণ করা উচিত নয়। The Wire-এর সম্পাদকদের বাড়িতে পুলিশি অভিযানের নিন্দা করে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে ডিজিপাব (DIGIPUB)।
ডিজিপাব ইন্ডিয়া, স্বাধীন ডিজিটাল নিউজ পোর্টালগুলির একটি সমষ্টি, বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যের দায়ের করা একটি ফৌজদারি মানহানির অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দ্য ওয়্যারের সম্পাদকদের (ডিজিপাব সদস্য) বাড়িতে দিল্লি পুলিশের অভিযানের নিন্দা করেছে৷
এদিনের বিবৃতিতে ডিজিপাব জানিয়েছে, “যদি কোনো সাংবাদিক বা সংবাদ সংস্থা মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তাদের সহকর্মী এবং সুশীল সমাজের কাছে দায়বদ্ধ হওয়া উচিত। কিন্তু পুলিশ যখন ক্ষমতাসীন দলের একজন মুখপাত্রের দায়ের করা এক ব্যক্তিগত মানহানির অভিযোগের ভিত্তিতে সম্পাদকদের বাড়িতে দ্রুত এবং নির্বিচারে তল্লাশি চালায় তা সম্পূর্ণরূপে বিদ্বেষমূলক উদ্দেশ্য।"
সম্মিলিতভাবে জারি করা এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে ওয়্যার, নিউজক্লিক সহ ডিজিপাবের প্রতিষ্ঠাতা নিউজ মিনিট, নিউজ লন্ড্রি, আর্টিকেল ১৪, স্ক্রোল, অল্ট নিউজের মতো ১১টি এগারোটি সংস্থার পক্ষ থেকে।
ওই বিবৃতিতে এই তল্লাশির বিপদের বিষয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, "দ্য ওয়্যারের গোপনীয় এবং সংবেদনশীল তথ্য বাজেয়াপ্ত এবং নকল করার জন্য এই তল্লাশি একটি অজুহাত হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।"
ডিজিপাব আরও উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে তদন্তটি "ভারতে ইতিমধ্যে সাংবাদিকতার ভঙ্গুর অবস্থাকে আরও খারাপ করার একটি হাতিয়ার" হয়ে উঠতে পারে।
প্রসঙ্গত, দু’দিন আগে বিজেপির আই টি সেলের প্রধান অমিত মালব্য অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগে তিনি দ্য ওয়্যারে প্রকাশিত মেটা সম্পর্কিত একাধিক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, মানহানি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের করেন। দ্য ওয়্যারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অমিত মালব্যের নাম ছিল।
এই প্রতিবেদনের সত্যতা অস্বীকার করে মেটা। এই প্রসঙ্গে মেটা জানায়, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তাতে ব্যবহৃত নথি এবং ইমেলগুলি "ভুয়ো" ছিল। দ্য ওয়্যার ২৩ অক্টোবর ওই সংক্রান্ত সমস্ত প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে এবং স্বীকার করে নেয় যে এটি যথাযথ তথ্য তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। এরপরেই দ্য ওয়্যার তাদের প্রাক্তন মূল প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ দেবেশ কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে এবং অভিযোগ জানায় তিনি তাদের সঙ্গে "প্রতারণা" করেছেন। প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং এর বিশাল পাঠকদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি দ্য ওয়্যার জানিয়েছিল, পুরো বিষয়টির জন্য একটি যথাযথ অধ্যবসায়ী অভ্যন্তরীণ তদন্ত করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন