সোমবার দিল্লির যন্তরমন্তরে হয়েছে কৃষকদের মহাপঞ্চায়েত। একদিন না পেরোতেই মঙ্গলবার কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইতকে নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি। কটাক্ষের সুরে টিকাইত-কে তিনি ‘দো কড়ি কা আদমি’ বা দু-পয়সার মানুষ বলে ‘অপমান’ করেন। উল্লেখ্য, লখিমপুর খেরিতে এই অজয় মিশ্রের ছেলে আশিষ মিশ্রের গাড়িই পিষে দিয়েছিল বেশ কয়েকজন আন্দোলনরত কৃষককে।
আন্দোলনকারী কৃষকদের ‘কুকুরের ঘেউ ঘেউ’ বলেও বিতর্কিত মন্তব্য করেন মোদীর মন্ত্রীসভার অন্যতম সদস্য অজয় মিশ্র। মঙ্গলবার সকালে, বিজেপি কর্মীদের সামনে রেখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র বলেন, ‘মনে করুন, আমি গাড়িতে করে লখনউ যাচ্ছি এবং এটি ভাল গতিতে যাচ্ছে। এসময় কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে। তারা রাস্তার ধারে থেকে ঘেউ ঘেউ করছে বা গাড়ি তাড়া করছে। এটা তাদের স্বভাব। সে সম্পর্কে আমি কিছু বলব না। এটা আমাদের স্বভাব নয়। বিষয়বস্তুই নিজেদের প্রকাশ করবে।’ মন্ত্রীর এই বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
ওই ভিডিওতেই ঔদ্ধত্য দেখিয়ে অজয় মিশ্রকে বলতে শোনা গেছে, ‘পৃথিবীর কেউ আপনাকে নিরাশ করতে পারবে না। যতই রাকেশ টিকাইত আসুক না কেন। আমি তাকে খুব ভালো করেই চিনি, 'দো কড়ি কা আদমি হ্যায়'। সে দুটি নির্বাচন লড়েছে এবং তার জামানত জব্দ হয়েছে। একজন ব্যক্তি প্রতিবাদ করলে আমি সাড়া দিই না।’
লখিমপুর খেরিতে সমর্থকদের সামনে নিজেকে ‘অপরাজেয়’ বলে অভিহিত করেন অজয় মিশ্র। নিজেকে একজন ‘যোদ্ধা’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাকে কিভাবে পরাজিত করা যায় তা বের করুন। হাতি তার পথে চলতে থাকে, কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে থাকে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩ অক্টোবর, উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পুত্র আশিস মিশ্রের গাড়ির ধাক্কায় চার কৃষক সহ আটজন প্রাণ হারান। এই ঘটনার জেরে বর্তমানে জেলে রয়েছেন অজয় মিশ্রের পুত্র আশিস মিশ্র। দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রকে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত এবং অভিযুক্ত আশিস মিশ্রকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব কৃষকেরা। গত ১৮ আগস্ট, কৃষক সংগঠনের পক্ষ থেকে লখিমপুর খেরিতে ৭২ ঘন্টা বিক্ষোভ দেখানো হয়।
এই ঘটনায় বেজায় চটেছেন মন্ত্রী অজয় মিশ্র। মঙ্গলবার, তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত বলেন, ‘তাঁর ছেলে এক বছর জেলে আছে, সে কারণেই তিনি রেগে আছেন।’
টিকাইত বলেন, ‘আমি একজন ছোট মানুষ, তিনি একজন বড় মানুষ। আমি প্রতিবাদের জন্য ৫০,০০০ মানুষকে নিয়ে লখিমপুরে গেছিলাম, যা দেখে তিনি রেগে গেছেন। লখিমপুরে গুন্ডারাজ (অনাচার) চলছে এবং মানুষ তাঁকে ভয় পায়। আমরা লখিমপুরকে ভয় মুক্ত করতে অভিযান চালাব।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন