দিল্লির যন্তর মন্তরে কুস্তিগীরদের ধর্না মঞ্চে এসে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
শনিবার, ভিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়াদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, 'এই মেয়েরা যখন পদক জেতে, তখন আমরা সবাই টুইট করি, বলি - তাঁরা আমাদের দেশের গর্ব। কিন্তু, এখন তাঁরা যখন রাস্তায় বসে ন্যায়বিচার চাইছে, কেউ তা শুনতে প্রস্তুত নয়। যদি এফআইআর দায়ের করা হয়ে থাকে, তাহলে সেই কপি তাঁদের সঙ্গে শেয়ার করা উচিত। মহিলা কুস্তিগীররা এই পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য অনেক সংগ্রাম করে এবং আমি বুঝতে পারছি না সরকার কেন ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে বাঁচাতে মরিয়া?'
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই। কারণ, তিনি যদি এই কুস্তিগীরদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হতেন, তাহলে অন্তত তাঁদের ডেকে একবার কথা বলতেন তিনি। যখন এই কুস্তীগীররা পদক জেতেন, তখন ফোন করে চায়ের জন্য তাঁদের ডেকেছিলেন তিনি। এবং, বলেছিলেন, এঁরা (এই কুস্তিগীররা) আমাদের মেয়ে।'
এরপরেই, ভারতের কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের পদত্যাগের দাবি তুলে প্রিয়াঙ্কা বলেন, 'এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। প্রথমেই এঁকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করা উচিত। যতক্ষণ তিনি ওই পদে থাকবেন, তিনি চাপ প্রয়োগ করতে থাকবেন এবং মানুষের ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে থাকবেন।'
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস নেত্রী বলেন, 'যদি এই ব্যক্তি এমন একটি পদে থাকেন, যার মাধ্যমে তিনি কুস্তিগীরদের ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে পারেন, তাঁদের হয়রানি করতে পারেন এবং চাপ প্রয়োগ করতে পারেন, তাহলে এফআইআর এবং তদন্তের অর্থ কী?'
এদিন, কুস্তিগীরদের মঞ্চে এসে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লির যন্তর মন্তরে দাড়িয়ে তিনি বলেন, 'কুস্তিগীররা আমাদের দেশকে গর্বিত করেছেন। তাঁরাই যন্তর মন্তরে বিগত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছেন। কুস্তিগীরদের অপমান করা হয়েছে। যারা মেয়েদের হেনস্থা করে তাদের ফাঁসি হওয়া উচিত। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, একটা এফআইআর দায়ের করানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে যেতে হয়েছে। মেয়েরা এগিয়ে না এলে খারাপ জিনিস চলতেই থাকত।'
একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আন্না হাজারে এখানে এসে রাজনীতিটা বদলে দিয়েছেন। এই আন্দোলন ভারতীয় স্পোর্টসকে বদলে দেবে। যাঁরা দেশকে ভালোবাসেন, তাঁরা ছুটি নিয়ে এখানে আসুন। আন্দোলনে যোগ দিন।'
এদিন অলিম্পিক পদক বিজয়ী বজরং পুনিয়া অভিযোগ করেন, দিল্লি পুলিশ প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের খাবার এবং জল দিতে পর্যন্ত অস্বীকার করছে। তিনি বলেন, বিক্ষোভস্থলের বিদ্যুৎও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
একথা শুনে কেজরিওয়াল বলেন, 'যদিও আমরা তাদের সমস্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা করব। তবে, আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে জল এবং বিদ্যুতের মতো মৌলিক সুবিধাগুলি বন্ধ না করার জন্য আবেদন করছি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন