আসামের দরঙ জেলায় উচ্ছেদ অভিযান চলাকালীন স্থানীয়দের ওপর নৃশংস আক্রমণ করলো পুলিশ। নৃশংসভাবে লাঠিচার্জের পাশাপাশি নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে স্থানীয়দের ওপর। ক্যামেরায় সেই ভিডিও ধরা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়। আহত বহু।
সোমবার থেকে দরঙ জেলার সিপাঝার থানার ধলপুর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০০টি পরিবারের উচ্ছেদের পর স্থানীয়দের বিক্ষোভে এই উচ্ছেদ অভিযান সহিংস রূপ নেয়।
স্থানীয় সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকে প্রথম পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। এরপরই বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালায় পুলিশ। এতে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে তারপর কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার ক্যানিস্টার ছোঁড়ে পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের একাধিক ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে লাঠি নিয়ে ধেয়ে আসছে। পুলিশের কাছাকাছি আসতেই প্রচুর পুলিশ তাঁকে ঘিরে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারা শুরু করেন। মাটিতে পড়ে নিঃস্তব্ধ হয়ে গেলেও পুলিশের লাঠি থামছে না। আরকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটি বিশাল মাঠের মধ্যে পুলিশ দাঁড়িয়ে রয়েছে, একটু দূরে ধোঁয়া উড়ছে। অন্য একটি ভিডিওতে আবার এক ফটোগ্রাফারকে এক বিক্ষোভকারীকে নৃশংসভাবে মারতে দেখা গেছে। বিক্ষোভকারী মাটিতে প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফটোগ্রাফার বারবার দৌড়ে এসে তাঁর বুকের ওপর পা তুলে লাফাচ্ছেন।
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ৯ জন পুলিশ অফিসার এবং দু'জন নাগরিক আহত হয়েছেন এই সংঘর্ষে। এসপি সুশান্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, "আমাদের ৯ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন। দু'জন নাগরিকও আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এই মুহূর্তে স্বাভাবিক। তবে এই পরিস্থিতির জন্য উচ্ছেদ অভিযান সম্পূর্ণ করতে পারিনি আমরা। পরে আবার করবো।"
সোমবার এই উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পরই ট্যুইটারে নিজের খুশি প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, "অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। ৮০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করে, ৪টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভেঙে গুঁড়িয়ে ৪,৫০০ বিঘা জমি খালি করার জন্য আমি খুব খুশি। এই কাজের জন্য দরঙ প্রশাসন ও আসাম পুলিশের প্রশংসা করছি আমি।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন