ক্ষমতায় আসার জন্য গণতন্ত্রকে ‘খুন’ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধে। অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই এই দাবি করেছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ঠাকরে বলেন, ‘গণতন্ত্রকে হত্যা করেই জিতেছেন একনাথ সিন্ধে। আমার মতো তাঁরও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত।’
বৃহস্পতিবার, মহারাষ্ট্রের ক্ষমতা পুনর্দখলের জন্য উদ্ধব ঠাকরের সকল সম্ভাবনার কথা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত রায়ে জানিয়েছে, ‘যেহেতু আস্থাভোটে অংশ না নিয়েই পদত্যাগ করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরে, তাই তাঁর সরকারকে পুনর্বহাল করা সম্ভব নয়।’
একইসঙ্গে, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘গত ৩০ জুন, সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য যে 'ফ্লোর টেস্ট' ডেকেছিলেন মহারাষ্ট্রের তৎকালীন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়ারি, সেটা বৈধ ছিল না। সেক্ষেত্রে বড় ভুল করেছিলেন রাজ্যপাল।’
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ‘সিন্ধে গোষ্ঠীর বিদ্রোহের পর বিধানসভায় উদ্ধব সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুইয়েছেন বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন রাজ্যপাল, তাতে ভুল পদক্ষেপ করেছিলেন। আস্থাভোট ডাকার মতো কোনও বিষয় ছিল না রাজ্যপালের।’
আদালত আরও জানিয়েছে, 'দুটি দল বা একটি দলের মধ্যে সংঘাত মেটানোর উপায় হিসেবে কখনও আস্থাভোটকে ব্যবহার করা যায় না। বিশেষত যেখানে তৎকালীন বিরোধী নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিস আস্থা ভোট ডাকেননি। রাজ্যপাল যে কাজ করেছেন, সেটা আইন মেনে হয়নি।’
একইসঙ্গে, বিধানসভার স্পীকারের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। এক পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, তৎকালীন শিবসেনা পার্টি প্রধানের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাকে অস্বীকার করে বিধানসভার স্পীকার যেভাবে সিন্ধে গোষ্ঠীর এক সদস্যকে ‘চিফ হুইপ’ হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে, তাও ‘বেআইনি’ ছিল।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে ‘ক্ষমতা’ ফিরে না পেলেও, নিজেদের ‘নৈতিক জয়’ দেখছেন উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী। সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলছেন, সুপ্রিম রায়ে স্পষ্ট হয়ে গেল, মহারাষ্ট্রের এই সরকার অনৈতিক। সিন্ধে সরকারের কোনও অধিকার নেই ক্ষমতায় থাকার।
উদ্ধব শিবিরের দাবি, শীর্ষ আদালত মেনেই নিয়েছে, একনাথ সিন্ধে অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় এসেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন