ইলেক্টোরাল বন্ডের তথ্য জমা দেবার বিষয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আবেদন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১২ মার্চের মধ্যে ইলেক্টোরাল বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা দিতে হবে। ১৫ মার্চের মধ্যে সেই তথ্য আপলোড করতে হবে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে। এসবিআই-এর আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয় এডিআর।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ইলেক্টোরাল বন্ডকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে ওই বন্ড বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল ৬ মার্চের মধ্যে সমস্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে এবং ১৩ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে ইলেক্টোরাল বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। যদিও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে কোনও তথ্য জমা দেয়নি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। উল্টে শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন করে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চায়। এদিন সেই আবেদনই খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত।
সোমবারের সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে এই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়াও ছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি জে বি পাদরিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র।
এদিন শুনানির শুরুতে এসবিআই-এর পক্ষে আইনজীবী হরিশ সালভে আদালতে জানান, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে সমস্ত তথ্য জমা দিতে আমাদের আরও কিছু সময় দরকার। যদিও আইনজীবীর এই আবেদনে সাড়া দেয়নি শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
এদিন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আবেদনের শুনানি ছাড়াও এই প্রসঙ্গিৎ অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস-এর আবেদনেরও শুনানি করা হয়।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ খুব স্পষ্ট ভাবেই তাদের নির্দেশ জানায়, এসবিআই-এর আবেদন এটাই প্রমাণ করে যে যে তথ্য চাওয়া হয়েছে তা সহজেই পাওয়া যেতে পারে। সেই কারণে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়ে এসবিআই-এর করা আবেদন খারিজ করা হল।
শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে আরও নির্দেশ দেওয়া হয় যে, আগামী ১২ মার্চ কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসবিআইকে ইলেক্টোরাল বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে। যদি এসবিআই এই আদেশ না মানে সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে।
এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যদিও আমরা অবমাননার এক্তিয়ার ব্যবহার করছি না, তবে আমরা SBI-কে জানিয়ে রাখছি যে আদালতের এই নির্দেশ না মানলে আদালতের ইচ্ছাকৃত অবমাননার জন্য তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনবে।
এর আগের রায়ে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যে রাজনৈতিক দলগুলি যত মূল্যের ইলেক্টোরাল বন্ড ভাঙিয়েছে তার প্রতিটি বন্ডের বিশদ বিবরণ SBI-কে অবশ্যই ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জমা করতে হবে।
এসবিআইকে যে যে বিবরণ জমা দিতে বলা হয়েছিল তার মধ্যে ছিল -
- কেনা প্রতিটি নির্বাচনী বন্ডের বিবরণ;
- ক্রেতার নাম;
- নির্বাচনী বন্ডের মূল্য; এবং
- ভাঙানোর তারিখ সহ রাজনৈতিক দলগুলি তহবিলে যাওয়া প্রতিটি নির্বাচনী বন্ডের বিবরণ।
নির্বাচন কমিশনকে এসবিআই-এর কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন