সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞাকে পাত্তাই দিল না শহরবাসী। এমনকি গত কয়েকসপ্তাহে শহরে বাতাসের হাল দেখেও হুঁশ ফিরল না রাজধানীর। সমস্ত চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে দীপাবলীর রাতে অঢেল বাজি ফাটল দিল্লির বুকে। পিছিয়ে রইল না কলকাতা-মুম্বইও। যার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে তিন শহরের বাতাসের গুণমানে। বিশেষ করে আকাশ ছুঁয়েছে দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI)। রবিবার রাতের বাজি-তাণ্ডবের পর সোমবার সকালে বিশ্বের ১০ সর্বাধিক দূষিত শহরের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ভারতের তিন শহর, দিল্লি, কলকাতা এবং মুম্বই।
গত কয়েকসপ্তাহ ধরেই ক্রমাগত খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে দিল্লির বাতাসের গুণমান। বিষাক্ত ধোঁয়াশায় মুখ ঢেকেছে দেশের রাজধানী। ব্যাপকভাবে কমেছে দৃশ্যমানতা। ভালোভাবে শীত পড়ার ঠিক আগের এই সময়টা এমনিতেই বাতাসের গুণমান বরাবরই অত্যন্ত খারাপ থাকে। তাই এই পরিস্থিতিতে দীপাবলীর রাত নিয়ে খানিক চিন্তা ছিলই। সেই কথা মাথায় রেখেই দিল্লিতে বাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে শুক্রবার থেকে রাজধানীতে খানিক বৃষ্টি হলেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি।
তার মধ্যেই শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সন্ধ্যা নামতেই পুলিশের নজর এড়িয়ে দিল্লির অলিগলিতে বেপরোয়াভাবে শুরু হয় বাজি ফাটানো। মধ্যরাত পর্যন্ত চলা সেই বাজি-তাণ্ডবের ফলে তরতরিয়ে বেড়েছে রাজধানীর একিউআই। রবিবার যেখানে দিল্লির একিউআই ছিল ২১৮, সোমবার সকালে ঘন ধোঁয়াশার ভিড়ে সেই একিউআই এক লাফে পৌঁছে গিয়েছে ৪২০-তে। এমনকি রবিবার রাতের দিকে কিছুক্ষণের জন্য দিল্লির বেশ কিছু জায়গায় ৬০০ থেকে ৯০০ পর্যন্ত চলে গিয়েছে বাতাসের গুণমান। আকাশছোঁয়া এই একিউআই যেকোনো সুস্থ মানুষের জন্য ‘শ্বাস-প্রশ্বাসের অযোগ্য’ বলে ধরা হয়।
সোমবারও ধোঁয়াশার জঙ্গলে মুখ ঢেকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তকমা নিজের কাছে রাখল দিল্লি। তবে খুব একটা পিছিয়ে নেই কলকাতা ও মুম্বই। রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলা শব্দবাজির দৌরাত্ম্যে জমাট বাঁধা ধোঁয়াশার কুণ্ডলী আচ্ছন্ন করে রেখেছে কলকাতার আকাশ-বাতাস। ১৯৬ একিউআই নিয়ে বিশ্বের সর্বাধিক দূষিত শহরের তালিকায় ৪ নম্বরে রয়েছে তিলোত্তমা। অন্যদিকে, তালিকায় আটে রয়েছে দেশের আরেক ‘অত্যন্ত’ দূষিত শহর মুম্বই (AQI ১৬৩)। একে শীতের শুরুতে দিনকেদিন বাতাসের গুণমান ‘শ্বাসপ্রশ্বাসের অযোগ্য’ হয়ে উঠছে, তার মধ্যেই দীপাবলির রাতের এই উদ্দাম বাজির উৎসব - সব মিলিয়ে চিন্তা বাড়ছে পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন