‘টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে শুক্রবার মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে। লোকসভার স্পীকারের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করলেন তৃণমূল নেত্রী। সোমবার প্রাথমিকভাবে ১৫ পাতার আবেদন দায়ের হল শীর্ষ আদালতে।
ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে উপঢৌকনের বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে লোকসভায় প্রশ্ন করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। সাংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ডও দর্শনকে দিয়েছেন মহুয়া। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে মহুয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছিলেন। লোকসভার এথিক্স কমিটিকে এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল।
এথিক্স কমিটি মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করে রিপোর্ট দেয়। গত শুক্রবার লোকসভায় সরকারীভাবে সেই রিপোর্ট পেশ করেছিল এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পাতার সেই রিপোর্ট পেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই ধ্বনিভোটের মাধ্যমে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পীকার ওম বিড়লা।
স্পীকারের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন মহুয়া মৈত্র। ১৫ পাতার আবেদন পত্রে তিনি এথিক্স কমিটির রিপোর্ট এবং তাঁকে বহিষ্কারের প্রস্তাবকে ‘সত্যের বিকৃতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশিই, এথিক্স কমিটির তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কী ভাবে তাঁকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে শুনানিকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সে কথার উল্লেখ রয়েছে মহুয়ার আবেদনে।
আবেদনে উল্লেখ করেছেন, কী ভাবে তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির হলফনামা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে মহুয়ার তরফে। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের ধারাবাহিক সমালোচনা করার কারণেই তাঁকে টার্গেট করে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতার ঔদ্ধত্য’। যা যুক্তি, আইন, এক্তিয়ার সব কিছু লঙ্ঘন করেছে।
প্রাক্তন সাংসদের অভিযোগ, বহিষ্কৃত করার দিন তাঁকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি সংসদে। স্পীকারের তরফে যুক্তি ছিল, ২০০৫ সালে লোকসভার ১০ জন সাংসদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময়ে তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট পেশ করে, তার ভিত্তিতে তাঁদের লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়। তৎকালীন স্পীকার অধুনাপ্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তদের বলতে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন