দেশে এই প্রথম কৃষকদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে। তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হচ্ছে, রাবার বুলেট ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারকে অবশ্যই আমাদের দাবি মানতে হবে নয়তো আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমাদের প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ এবং আমরা অবশ্যই জয়লাভ করব। বুধবার সকালে কৃষকদের ডাকে দিল্লি চলো অভিযানের দ্বিতীয় দিনে একথা জানিয়েছেন পাঞ্জাবের কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের।
কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযানের দ্বিতীয় দিনে বর্তমানে দিল্লিমুখী কৃষকরা পাঞ্জাব হরিয়ানা সীমান্ত অঞ্চলে আটকে রয়েছেন। কড়া নিরাপত্তা মুড়ে ফেলা এলাকায় তাঁদের আগে এগোতে দেওয়া হচ্ছেনা। এর আগে গতকাল দিল্লিমুখী কৃষকদের আটকাতে তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়েছিল। ব্যবহার করা হয়েছিল জলকামান। যাতে বেশ কয়েকজন কৃষক আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবারের মত বুধবারেও ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জন্য আইন প্রণয়ন, কৃষি ঋণ মকুব, গত কৃষক আন্দোলনের সময় কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার সহ একাধিক দাবিতে দিল্লি চলো অভিযানে অনড় রয়েছেন কৃষকরা। প্রায় ২০০টি কৃষক সংগঠনের ডাকে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে এই অভিযান। এর আগে কৃষক নেতৃত্বের সঙ্গে কেন্দ্রের পাঁচ ঘণ্টা দীর্ঘ বৈঠক ব্যর্থ হয়।
কৃষকদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী হারপাল চিমা এক্স-হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন: “আমরা কৃষকদের উপর আক্রমণ এবং নৃশংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কৃষকরা গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এই আক্রমণ @BJP4India এবং @cmohry-এর দানবিক মানসিকতার প্রকাশ৷ সরকারকে গঠনমূলক আলোচনার জন্য কৃষকদের ডাকতে হবে এবং তাদের দাবি শুনতে হবে।”
ইতিমধ্যেই কৃষক ইউনিয়নগুলির পক্ষ থেকে অবস্থানের অঞ্চলে সাময়িক পরিষেবার দেবার জন্য হাসপাতাল শুরু করা হয়েছে। পাঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকে যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার অনেক জায়গাতেই কৃষকরা ট্রাক্টর দিয়ে সিমেন্ট ও কাঁটাতারের বেড়া সরিয়ে দেয়। দিল্লিমুখী সীমান্ত অঞ্চলে পুলিশের তৈরি করা বহু-স্তরীয় ব্যারিকেড অনেক জায়গাতেই ভেঙে ফেলেছেন কৃষকরা।
কৃষকরা পাঞ্জাব থেকে হরিয়ানায় প্রবেশ করতে এবং দিল্লির দিকে যাওয়ার জন্য সিঙ্ঘু সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আম্বালা-শম্ভু, খানৌরি-জিন্দ এবং ডাবওয়ালি সীমান্ত হয়ে তাঁরা দিল্লির দিকে যাবেন বলে জানা গেছে। কৃষকদের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করতে হরিয়ানার সাতটি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে এবং পাঁচকুলা ও চণ্ডীগড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন