মধ্যপ্রদেশে পুর শ্রমিকদের মৃত দেখিয়ে সরকারি ক্ষতিপূরণ আদায় করেছেন সরকারি আধিকারিকরা! চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করছেন স্বয়ং 'মৃত' শ্রমিকরা।
মধ্যপ্রদেশের ইতিহাসে সবথেকে বড় দুর্নীতি হল ব্যাপম কেলেঙ্কারি। ফের সেরকমই কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে পুরকর্মীদের 'মৃত' দেখিয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। মধ্যপ্রদেশে পুরকর্মীদের আর্থিক সহায়তার জন্য মধ্যপ্রদেশ বিল্ডিং অ্যান্ড আদার কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কাস ওয়েলফেয়ার বোর্ড রয়েছে। কোনো শ্রমিক মারা গেলে বা কারুর সন্তানের বিবাহ হলে আর্থিক সাহায্য করা হয়ে থাকে। নিয়ম বলছে কর্মরত অবস্থায় যদি কোনো শ্রমিকের মৃত্যু হয় তাহলে ওই শ্রমিকের পরিবার ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে।
এই নিয়মকে হাতিয়ার করেই মোট ১১৮ জন শ্রমিককে 'মৃত' দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সরকারি আধিকারিকরা। যার মধ্যে ১১ জন শ্রমিককে জীবিত অবস্থাতেই দেখা গেছে। পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ওই শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একাধিক সংবাদমাধ্যম।
উর্মিলা রাইকোয়ার নামের এক শ্রমিক জানান, 'নথি তো বলছে আমি মারা গেছি। কিন্তু আমি বেঁচে রয়েছি। আমি যদি মারা যেতাম তাহলে আমার সন্তানরা টাকা পেতো। কিন্তু তারাও কিছু পায়নি। ওরা আমাকে মেরে ফেলেছে। আবার ব্যাঙ্কের কাগজে দেখাচ্ছে মরে যাওয়ার পর সেই টাকা নাকি আমিই তুলেছি'।
মহম্মদ কামার বলেন, আমাকেও নাকি পুরসভার নথিতে মৃত দেখানো হয়েছে। আবার টাকাও পেয়েছি। আমি তো জীবিত রয়েছি। এই নথি দেখে আমি সত্যিই অবাক। আবার আমাকে নাকি টাকা হয়েছে ২০২৩ সালের ২১ জুন। এই বিষয়ে অবশ্যই মামলা করবো।
তিনি আরও বলেন, কল্যাণ বোর্ড বিবাহের জন্য ৫১ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করে। কয়েক বছর আগে আমার মেয়ের বিয়ের জন্য ওই টাকা চাইতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এক পয়সা আমাকে কেউ দেয়নি। আমার কথায় কেউ বিশ্বাসই করেনি। সকলেই নথি দেখে আর্থিক সহায়তা দেয়নি।
পুরসভার তরফ থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। তবে মধ্যপ্রদেশ সরকার পুরো বিষয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। তবে অপরাধের আকার দেখে আসল অপরাধীরা আদৌ ধরা পড়বে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন