বিহারের কোচিং সেন্টারগুলির বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঝি বৃহস্পতিবার বলেছেন যে, এই ধরনের পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে আরও তীব্র করতে পারে। তাঁর কথায় – “বিহারে খান স্যারের মতো শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এফআইআর শিক্ষার্থীদের অঘোষিত আন্দোলনকে উস্কে দিতে পারে। বেকারত্বের বিষয়ে এবার সরকারের কথা বলার সময় এসেছে। নয়তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”
মাঝির দল বিহারে নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের জোটসঙ্গী। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিহারের যুবকদের ১৯ লাখ চাকরি দেওয়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এনডিএ জোট। ইতিমধ্যেই, হাজার হাজার চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুবকরা রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড RRB-NTPC পরীক্ষার প্যাটার্ন পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।
RRB-NTPC ২০১৯ সালে চাকরির জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এবং প্রচুর সংখ্যক পরীক্ষার্থী এটির জন্য আবেদন করেছে। বেশ কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছে। সম্প্রতি, RRB-NTPC নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, যারা আগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদের আবার পরীক্ষা দিতে হবে। যারা উত্তীর্ণ হবে, তারাই চূড়ান্ত বাছাই হিসাবে গন্য হবে। পূর্ববর্তী পরীক্ষাটি প্রাথমিক পরীক্ষা হিসাবে বিবেচিত হবে।
ছাত্রদের দাবি, এটা কেন্দ্রীয় সরকার ছাত্রদের সঙ্গে সম্পূর্ণ প্রতারণা করছে। বেকার যুবকদের চাকরি দিতে চায় না কেন্দ্র। পাটনার বিশিষ্ট শিক্ষক ‘খান স্যার বলেন – “যারা আগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের উপর অতিরিক্ত পরীক্ষার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ধরুন, তারা মেইন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু কীভাবে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে তারা পরীক্ষায় বসবে? মেইন পরীক্ষার জন্য এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব নয়।”
এই বক্তব্যের পরেই খান স্যার সহ অন্যান্য কোচিং ইনস্টিটিউটের ১৫ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উস্কানি দেওয়ার জন্য মামলা করা হয়েছে। খান স্যারের বিরুদ্ধে পাটনার পাত্রকার নগর থানায় আইপিসি ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ১৫১, ১৫২, ১৮৬, ১৮৭, ১৮৮, ৩৩০, ৩৩২, ৩৫৩, ৫০৪, ৫-৬ এবং ১২০-বি ধারায় মামলা করা হয়েছে। তিনি ছাড়াও এস.কে. ঝা স্যার, নবীন স্যার, অমরনাথ স্যার, গগন প্রতাপ স্যার, গোপাল ভার্মা স্যারদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ছাত্ররা ইতিমধ্যেই ২৮ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন তীব্র করার ঘোষণা দিয়েছে। তারা আগামীকাল বিহার বনধের ডাকও দিয়েছে। ছাত্রদের অঘোষিত আন্দোলনকে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এবং সেইসাথে ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া (NSUI) এর মতো ছাত্র সংগঠনগুলি সমর্থন করছে। আরজেডি এবং জন অধিকার পার্টি (জেএপি)ও ছাত্রদের সমর্থন দিয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন