আসন্ন লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ‘এক দেশ এক ভোট’র রিপোর্ট জমা দিল রামনাথ কোবিন্দ কমিটি। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মর কাছে ১৮ হাজার পাতার রিপোর্ট জমা দিল কমিটি। ২০২৯ থেকেই লোকসভা, বিধানসভা, পৌরসভা ও পঞ্চায়েত ভোট একসাথে কার্যকর করার সুপারিশ রয়েছে রিপোর্টে।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গড়েছিল কেন্দ্র। এই কমিটিতে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ, প্রাক্তন অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিং, লোকসভার প্রাক্তন মহাসচিব সুভাষ কাশ্যপ এবং সিনিয়র অ্যাডভোকেট হরিশ সালভে।
যদিও জানা যায়, এই কমিটিতে যোগ দানের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরিকে। কিন্তু ‘এক দেশ এক ভোট’ ত্বত্ত্বটির বিরোধিতা করে সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি তিনি।
সেই কমিটিই বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মর কাছে আট খন্ডে বিভক্ত ১৮ হাজার পাতার রিপোর্ট জমা দিল। এদিন উপস্থিত ছিলেন কমিটির আরেক সদস্য তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণের পর ‘এক দেশ এক ভোট’র প্রস্তাব দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করে গেছে সিপিআইএম, কংগ্রেস, তৃণমূল সহ আঞ্চলিক বিরোধী শিবির গুলি। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী। মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচে ভোট করতে চাইছে।
এব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত ছিল, শুধু লোকসভা ভোট হলে বিরোধী দলগুলির পক্ষে আসন সমঝোতা করা সহজ হবে। কিন্তু একই সঙ্গে বিধানসভা ভোট জুড়ে দিতে পারলে কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগী আঞ্চলিক দলগুলির বিরোধ অনিবার্য।
যদিও লোকসভা ভোটের সঙ্গে সব রাজ্যে বিধানসভা ভোট করানোর পক্ষে বিজেপি সরকারের যুক্তি ছিল, এতে নির্বাচনের খরচ অনেকটা কমবে। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না। নীতি আয়োগ, আইন কমিশন, নির্বাচন কমিশনও এই ভাবনাকে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে বলে কেন্দ্রের দাবি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন