মাত্র কিছুদিন আগেই সিপিআই ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন কানহাইয়া কুমার। মঙ্গলবার তিনি নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন ইনস্টাগ্রামে। তারপর থেকেই এই তরুণ নেতা ট্রলিংয়ের শিকার হয়েছেন। ট্রোলড হওয়ার কারণ, তাঁর ছবির আয়েশি মুড।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি দামি আসবাবে সুসজ্জিত ঘরে একটি কাউচে বসে জানলার সামনে রাখা একটি সোফাসেটে পা তুলে কবিতার বই পড়ছেন। জানলা দিয়ে বাইরের যে প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে তিনি কোনও পাহাড় ঘেরা উপত্যকায় রয়েছেন। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি।
সেই ছবির সঙ্গে উর্দু কবি বশির বদরের কবিতার লাইনও উদ্ধৃত করেছেন কানহাইয়া— ‘যদি আমি চুপ থাকি, তা হলে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ে। আমি যা বলিনি, তা-ও শুনে ফেলে!’ ছবিটি আর একটু ভালো করে দেখলে বোঝা যাবে, রীতিমতো দামী কোনও হোটেল সেটি। কানহাইয়ার বেগুসরাইয়ের মাটির বাড়ি থেকে সেই হোটেল যেন কয়েক আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতার এই ছবি নিয়েই বিতর্ক ছড়িয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে বিরূপ মন্তব্যের পাশাপাশি হ্যাশট্যাগ 'মার্ক্সবাদ সে আজাদি’ নামে ট্রোল্ডও হচ্ছেন তিনি। প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার আগে পটনার সিপিআই কার্যালয়ে নিজের ঘর থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র খুলে নিয়ে গিয়েছিলেন কানহাইয়া। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলেও বিহারের সিপিআই নেতারা আপত্তি জানাননি। তাঁরা জানিয়েছিলেন, ওই এসি নিজের টাকায় বসিয়েছিলেন কানহাইয়া।
কয়েক বছর আগে দিল্লির জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ যে হামলা চালায়, তার প্রতিবাদে 'আজাদি' স্লোগান বানিয়েছিলেন কানহাইয়া। তাঁর গলায় সেই স্লোগান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম ও বামপন্থীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ফলে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। বিহারে সিপিআই ও কানহাইয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তরফেও তাঁর জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বেগুসরাই থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় ব্যয়ের হিসেব নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে হিমাচলপ্রদেশ যান কানহাইয়া কুমার। তারপর নিজের ফেসবুক পেজে ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, 'হিমাচল প্রদেশ থেকে ফেরার পথে চণ্ডীগড়ে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় শ্রী চরণজিত সিং চান্নিজির সঙ্গে দেখা করলাম...।' ইনস্টাগ্রামের পাহাড় ঘেরা উপত্যকায় সুসজ্জিত ঘরের এই ছবিও তখনকার তোলা বলেই অনুমান করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন