গঙ্গানদী সংস্কারের জন্য দরকার পাঁচ বছর। এমনটাই বললেন ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা বা এনএমসিজি ডিজি রাজীব রঞ্জন মিশ্র। তাঁর সদ্য প্রকাশিত বইয়ে তিনি গঙ্গা দূষণ নিয়ে সরব হয়েছেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন আছড়ে পড়েছিল চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে, গঙ্গা নদী যেন মৃতদেহের ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়ে উঠেছিল। গত ১১ মে তিনি ৫৯ টি গঙ্গা কমিটির কাছে গঙ্গার মৃতদেহ ভাসানো রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছিলেন তিনি।
এমনটা প্রথম দেখা যায় উত্তরপ্রদেশে। উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা থেকে প্রচুর মৃতদেহ ভেসে আসতে দেখা গিয়েছিল করোনার সেকেন্ড ওয়েভের সময়। উত্তর প্রদেশ থেকে বিহারে এসে ঠেকছিল দেহগুলি। এই নিয়ে আতঙ্ক বেড়েছিল জনমানসে। শেষ পর্যন্ত গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসানো রুখতে পুলিশ প্রশাসনকে দিয়ে মৃতদেহ পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হয় যোগী সরকারকে।
রাজীব মিশ্র ১৯৮৭-র ব্যাচের তেলেঙ্গানা ক্যাডার আইএএস অফিসার। দু’দফায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে এনএমসিজি-তে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। আগামী ৩১ ডিসেম্বর তিনি অবসর নিতে চলেছেন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিবেক দেবরয় তাঁর
লেখা 'ভাসমান মৃতদেহ: একটি নদী অপবিত্র' শীর্ষক বইটির উদ্বোধন করেন। বইটিতে তিনি গঙ্গার উপর মহামারীর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বলেছেন, 'নদীটিকে সংরক্ষণের জন্য পাঁচ বছরের লাগাতার প্রয়াস জরুরি।'
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে দেখা যায় গঙ্গার তীরে পড়ে থাকা মৃতদেহের স্তূপ, ছিঁড়ে খাচ্ছে কুকুর। মাইলের পর মাইল জুড়ে পড়ে আছে হাজার হাজার দেহ। প্রত্যেকদিনই ঘাটে ঘাটে ভেসে উঠছে পচা-গলা দেহ। সৎকারের উপায় না থাকায় এভাবে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই অনুমান।
আইএএস অফিসার লিখেছেন, 'গুরুগ্রামের মেদান্তা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলাম। মে মাসের শুরুতে পোড়া, আধপোড়া, ফুলে যাওয়া মৃতদেহ গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা জানতে পারি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন