৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিনই ২০০২ সালের বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের 'ক্ষমা নীতি'র অধীনে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। আর আদালতের এই রায়ের পর ফের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিলকিস বানো। নিজস্ব বিবৃতিতে বিলকিস বানো জানিয়েছেন - “আমাকে নির্ভয়ে শান্তিতে বাঁচার অধিকার ফিরিয়ে দিন”।
গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি আরও জানিয়েছেন - "গত দু'দিন আগে অর্থাৎ ১৫ আগস্ট ২০২২, আমাকে আমার বিগত ২০ বছরের ভয়ঙ্কর অতীত পুনরায় মনে করিয়ে দিয়েছে। যখন থেকে আমি শুনেছি যে ওই ১১ জন আসামী ছাড়া পেয়েছে, তখন থেকেই আমি নির্বাক এবং অসাড় হয়ে পড়েছি। ওরা আমার পরিবার এবং আমার জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে এবং আমার থেকে আমার তিন বছরের মেয়েকেও কেড়ে নিয়েছে।"
তাঁর কথায় - "একজন নারীর অধিকারের জন্য লড়াই, তাঁর উপর হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার এভাবে শেষ হতে পারে কী করে? আমি দেশের শীর্ষ আদালতের উপর আস্থা রেখেছিলাম। মানসিক আঘাত কাটিয়ে আবার ধীরে ধীরে বাঁচতে শিখছিলাম। আমার যন্ত্রণা এবং বিশ্বাস শুধু আমার একার ছিল না। ছিল সেইসব মেয়েদের জন্য যাঁরা আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় ক্রমাগত লড়াই করছেন। অথচ এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কেউ একবারও আমার নিরাপত্তা এবং ভালোভাবে বাঁচার কথা চিন্তাও করল না।"
গতকাল গুজরাট সরকারের কাছে বানো আবেদন জানান, "অনুগ্রহ করে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। এবং দয়া করে আমার এবং আমার পরিবারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করুন।" বানোর এই সংক্ষিপ্ত বিবৃতি স্বাভাবিকভাবেই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে গুজরাট সরকারের তরফে তাঁর সাথে এই বিষয়ে কোনও আলোচনাই করা হয়নি।
এক সংবাদ মাধ্যমে বানোর আইনজীবী আইনজীবী শোভা গুপ্তা বলেছেন, "ওই ১১ জন আসামী জেলে যাওয়ার পরেও বছরের পর বছর আত্মগোপনে থেকেছেন বানো। ক্রমাগত বাড়ি বদল করেছেন। তাই তাঁদের মুক্তির পর আইনি পদক্ষেপ নিয়ে যথেষ্ট হতবাক হয়েছেন তিনি এবং আত্মসুরক্ষার বিষয়ে যথেষ্ট চিন্তিত।"
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা দিবসের দিন ১১ জন ধর্ষক মুক্তি পাওয়ার পর ক্ষমতার অলিন্দে থাকা বিজেপি সরকারের সাথে যুক্ত বেশকিছু গোষ্ঠী তাদের মালা, মিষ্টি দিয়ে আলিঙ্গন করে স্বাগত জানিয়েছে। এই পদক্ষেপের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন