কংগ্রেসকে নিয়ে জোট বাঁধার প্রক্রিয়া আরও জোরালো হচ্ছে দেশীয় রাজনীতিতে। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোর করে শিবসেনা ও এনসিপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছে। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে নয়। তৃণমূল শুধু গোয়াতেই কংগ্রেসের ভাঙন ধরিয়েছে, তা নয়। গোয়ার একমাত্র এনসিপি বিধায়ক চার্চিল আলেমাও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এদিকে সঞ্জয় রাউত গোয়া এসেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার সঙ্গে আলোচনা করেই।
যদিও এনসিপি, শিবসেনার সঙ্গে জোট করে কংগ্রেস আদৌ লাভবান হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে দলের অন্দরেই। কারণ, গোয়ায় শিবসেনার খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এনসিপি গত বিধানসভায় আড়াই শতাংশের মতো ভোট পেয়েছিল। এআইসিসি-র নেতা দীনেশ গুণ্ডু রাওয়ের বক্তব্য, আলোচনা হয়েছে। জোট কী চেহারা নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই। রাউত জানিয়েছেন, শিবসেনা গোয়ায় কিছু আসনে লড়বে।
বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যের বাইরে পা বাড়িয়েছে তৃণমূল। ত্রিপুরা, গোয়ার মতো ছোট রাজ্যে প্রাধান্য বিস্তার করতে চেয়েছে। তার জন্য বারবার কংগ্রেসকে কটাক্ষ, নিশানা করতে ছাড়েননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার তিনি প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেসের অস্তিত্ব নিয়ে। ইউপিএ নেই তত্ত্ব খাড়া করার চেষ্টা করেন। তার জন্য তিনি মুম্বইয়ে গিয়ে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক পর্যন্ত করেন। শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা না হলেও আদিত্য ঠাকরে ও সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি।
তারপরে গোয়ায় তৃণমূল, এনসিপি, শিবসেনা হাত মেলাতে পারে বলে জল্পনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টোটা হতে দেখা যায়। শিবসেনা তাদের মুখপাত্র সামনা-য় তৃণমূলের সমালোচনা করে। শুধু তাই নয়, স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রের বিজেপি বিরোধী জোটে নেতৃত্ব দেবে কংগ্রেস। কংগ্রেস ছাড়া বিরোধী জোট অসম্পূর্ণ। পাশাপাশি অন্য দলগুলো তাদের মতামত জানিয়ে দেয় যে, বিরোধী জোটে কংগ্রেসই প্রধান। তৃণমূল জোটে থাকতেই পারে। কিন্তু কোনওভাবে নেতৃত্ব দেবে না।
শিবসেনার সেনা সঞ্জয় রাউত এখন গোয়ায় গিয়ে রাজ্যের কংগ্রেস ও এনসিপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তাঁর বক্তব্য, মহারাষ্ট্রে শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেসের জোট— মহা বিকাশ আঘাড়ী আছে। গোয়ায় তেমনই জোট হতে পারে। মঙ্গলবার রাতে রাউত এআইসিসি-তে গোয়ার ভারপ্রাপ্ত নেতা দীনেশ গুন্ডু রাও, রাজ্যের নেতা গিরিশ চোডণকর, দিগম্বর কামাতের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তৃণমূলের দাবি, বিজেপির বিরুদ্ধে যে শক্তি নিয়ে লড়াই করা উচিত, কংগ্রেস তা করছে না। বরং বিজেপি বিরোধিতায় বারবার হেরে গিয়েছে কংগ্রেস। সেখানে বারবার জিতেছে তৃণমূল। তাই তৃণমূলই প্রধান শক্তি হয়ে উঠতে পারে। এখন কংগ্রেসের পাশে শিবসেনা, এনসিপি গিয়ে দাঁড়ানোয় তৃণমূল নেতারা বলছেন, এ সবে কোনও ইস্যু নয়। তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে তিনটি দল মিলে সরকার চালায়। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের একাই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তাই আমাদের অন্য কোনও দলের সঙ্গে চলতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই। প্রয়োজনও নেই।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন