নাবালিকাকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। ১৫ বছর বয়সী এক অনাথ কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার মধ্যরাতে বিশাখাপত্তনমের এক আশ্রম থেকে অভিযুক্ত স্বামী পূর্ণানন্দকে গ্রেফতার করে অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ। টানা প্রায় ২ বছর ধরে যৌন নিপীড়ন এবং অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে খবর। রাজামহেন্দ্রভারামের বাসিন্দা ওই অভিযোগকারী নাবালিকা খুব অল্প বয়সে তার বাবা-মাকে হারায়। এরপর আত্মীয়-স্বজনরা তাকে অনাথ, গরীব শিশু ও বয়স্কদের জন্য তৈরি বিশাখাপত্তনমের স্বামী জ্ঞানানন্দ আশ্রমে পাঠিয়ে দেয়।
নাবালিকার অভিযোগ, সেখানেই ৬৩ বছর বয়সী স্বামী পূর্ণানন্দ টানা ২ বছর ধরে তাঁর উপর যৌন নিপীড়ন চালান। পুলিশের কাছে সে জানিয়েছে, অভিযুক্ত স্বামী পূর্ণানন্দ প্রতিদিন রাতে তাঁর শোওয়ার ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করতেন। গত ২ বছর ধরে তাঁকে শোষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সে।
শুধু তাই নয়, শেষ এক বছর ধরে সেই ঘরেই তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখাও হয়েছিল বলে দাবি করেছে অভিযোগকারীনি। পুলিশের কাছে সে আরও জানিয়েছে, তাঁকে প্রতিদিন শুধুমাত্র দুই চামচ খাবার দেওয়া হতো এবং সপ্তাহে মাত্র একবার স্নানের অনুমতি ছিল তাঁর।
গত ১৩ জুন সেই আশ্রমেরই এক কর্মীর সহায়তায় আশ্রম থেকে পালিয়ে ট্রেন ধরে ওই নাবালিকা। সেই ট্রেনেই এক মহিলা সহযাত্রীকে তাঁর দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার জানালে ওই মহিলা তাঁকে কৃষ্ণা জেলার কাঙ্কিপাড়ুর এক হোস্টেলে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই হোস্টেল কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশের থেকে একটি চিঠি চাওয়া হয়। পুলিশের থেকে চিঠি নিয়ে জনৈক ওই মহিলা অভিযোগকারী নাবালিকাকে নিয়ে শিশু কল্যাণ সমিতির স্মরণাপন্ন হন। সেখানে ওই নাবালিকা তাঁর উপর হওয়া যৌন নির্যাতনের কথা জানায়।
এরপর সেই সমিতির তরফ থেকে ওই নাবালিকাকে নিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়া হয় এবং তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী পূর্ণানন্দের নামে পকসো আইনের আওতায় মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগকারী নাবালিকাকে এরপর চিকিৎসার জন্য বিজয়ওয়াড়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বামী পূর্ণানন্দকে গ্রেফতারের পর আশ্রম সূত্রে জানা যায়, এবারেই প্রথম নয়। আগেও ২০১২ সালে ওই আশ্রমেরই এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তার উপরে। তখন গ্রেফতার করা হলেও কিছুদিন পরেই জামিনে ছাড়া পান তিনি। এবারেও গ্রেফতারের পর অভিযুক্ত স্বামী পূর্ণানন্দ পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি একটি বড় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন