সমাজকর্মী তিস্তা শীতলবাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে খোলা চিঠি লিখলেন বিশিষ্ট প্রাক্তন আমলারা। পাশাপাশি সম্প্রতি তিস্তা শীতলবাদ সম্পর্কিত এক মামলায় রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতি তাঁর সম্পর্কে যে 'ভিত্তিহীন পর্যবেক্ষণ' করেছেন, তা প্রত্যাহার করারও দাবি তুলেছেন প্রাক্তন আমলারা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, তিস্তা শীতলবাদকে নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা অবাঞ্ছিত। নাগরিক সমাজ এই অবাঞ্চিত মন্তব্যে হতবাক। তাঁদের মনে প্রশ্ন জাগছে। সুপ্রিম কোর্টের উচিত এই অবাঞ্চিত মন্তব্য কেন করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করা। ব্যাখ্যা না করে প্রতিদিন নিরব থাকলে তা সুপ্রিম কোর্টের মান মর্যাদাকে আরও ক্ষুন্ন করে। সংবিধানের মূল অনুশাসনকে ধরে রাখার জন্য সুপ্রিম কোর্ট যে সংকল্প নিয়েছে সেই সংকল্প নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।
খোলা চিঠিতে যাঁদের স্বাক্ষর রয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন - প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব জি কে পিল্লাই, প্রাক্তন বিদেশ সচিব সুজাতা সিং, প্রাক্তন তথ্য কমিশনার ওয়াজাহাট হাবিবুল্লা, প্রাক্তন স্বাস্থ্য সচিব কে সুজাতা রাও প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এএস দুলাত, অরুনা রায় প্রমুখ। মোট ৯২ জনের স্বাক্ষর রয়েছে।
চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির কাছে তাঁদের দাবি, রায় ঘোষণার পরের দিনই গ্রেফতার করা হয় তিস্তা শীতলবাদকে। বিচারপতিদের উদ্দেশ্য কী ছিল? রায় দেওয়া নাকি শীতলবাদকে গ্রেপ্তার করা? একথার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে বিচারপতিদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গুজরাটে ২০০২ সালে দাঙ্গার ঘটনায় নিযুক্ত SIT তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ক্লিনচিট দেয়। SIT-এর রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন তিস্তা শীতলবাদ। গত মাসে এই মামলার শুনানিতে SIT-এর রায়ই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি তিস্তা শীতলবাদের বিরুদ্ধেও বিরূপ মন্তব্য করেন এক বিচারপতি। এই মন্তব্যের ভিত্তিতেই রায় ঘোষণার পরের দিনই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিস্তা শীতলবাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে খোলা চিঠিতে এই ঘটনারই ব্যাখ্যা চেয়েছেন প্রাক্তন আমলারা।
অন্যদিকে, বুধবার দায়রা আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন তিস্তা শীতলবাদ। এই জামিনের আবেদনের শুনানি চলাকালীন এই বিষয়ে গুজরাট সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন