রবিবার গুজরাটের মোরবি জেলায় ঝুলন্ত সেতু ভেঙে প্রায় ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন রাজকোটের বিজেপি সাংসদ মোহনভাই কুন্ডারিয়ার পরিবারের ১২ জন সদস্য। বিজেপি সাংসদের ব্যক্তিগত সচিব জানান, নিহতদের মধ্যে ৫ জন শিশুও রয়েছে।
সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার পর কুন্ডারিয়া নিজেই মোরবিতে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং উদ্ধারকার্যের বিষয়ে খোঁজখবর নেন। সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানান, "অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনাস্থলে প্রচুর পলি জমে ছিল। যার ফলে সেখানে জল নিষ্কাশনের যন্ত্র নিয়ে আসা হয়, যাতে আমরা দ্রুত মৃতদেহগুলিকে উদ্ধার করতে পারি।"
নিহতরা কুন্ডারিয়ার দাদার নিকটাত্মীয়। তিনি জানান, "আমার বড় দাদার শ্যালকের চার মেয়ে, তাঁদের তিনজনের স্বামী এবং তাঁদের পাঁচ সন্তান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। এঁরা টানকারা তালুকের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু প্রত্যেকেই মোরবিতে থাকতেন। রবিবার থাকায় সকলে নদীর পাড়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন। তারপর ছট পুজা দেখতে ব্রিজের উপরে উঠেছিলেন।"
অন্যদিকে সোমবার গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি জানান, "ঘটনার তদন্ত করতে সরকারে ইতিমধ্যেই উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করেছে। তাঁরা তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী গতকাল (রবিবার) আহমেদাবাদ ছেড়ে যাওয়ার সময় নিজেই একটি হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের হয়েছে। রেঞ্জ আইজিপি (Range IGP)-র নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে সোমবার।"
সিংভির কথায়, গতকাল রাত থেকে প্রায় ২০০-এরও বেশি লোক অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকার্যে কাজে নিযুক্ত রয়েছে। খবর পাওয়া মাত্র দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে নৌবাহিনী, এনডিআরএফ, বিমান বাহিনী এবং সেনাবাহিনী।
রাজকোট পিডিইউ হাসপাতাল, সুরেন্দ্রনগর সিভিল হাসপাতাল এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন ডাক্তার মোরবি সিভিল হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা শুরু করেন। সেতুটি ভেঙে পড়ার পর রাজকোট মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন নৌকা এবং লাইফ জ্যাকেটসহ উদ্ধার সামগ্রী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
কর্মকর্তাদের কথায়, আহতদের অবিলম্বে হাসপাতালে আনার জন্য রাজকোট, জামনগর, জুনাগড় মেট্রোপলিটন পৌরসভা এবং মোরবি পৌরসভা থেকে অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছে। সেগুলি সারারাত ধরে পরিষেবা দিয়েছে। উদ্ধারকাজে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সও যুক্ত ছিল। সুরেন্দ্রনগর থেকে সেনাবাহিনী তাদের তিনটি অ্যাম্বুলেন্স এবং সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করেছে।
সূত্রের খবর, বিপর্যয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষভাই সিংভি, মন্ত্রী ব্রিজেশ মের্জা এবং প্রতিমন্ত্রী শ্রী অরবিন্দ রায়নি ঘটনাস্থলে পৌঁছান ও উদ্ধারকাজ পর্যবেক্ষণ করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন