বিজেপি শাসিত গুজরাটে মোরবি সেতু সংস্কার এবং তা পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে গোটা ব্যবস্থাপনায় বিশাল ত্রুটি প্রকাশ্যে এসেছে। যার জেরে প্রশ্নের মুখে সেতু সংস্কারক সংস্থা ওরেভা গ্রুপ এবং মোরবি পুরসভা। তদন্ত মারফত জানা গেছে, সেতু বিপর্যয়ের দিনে ৩,১৬৫টি টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার জেলা আদালতে ফরেন্সিক রিপোর্ট পেশ করার সময় সরকারি আইনজীবী জানান, ঝুলন্ত সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা এবং নিরাপত্তার চুক্তির অধিকারী ওরেভা গ্রুপ গত ৩০ অক্টোবর অর্থাৎ দুর্ঘটনার দিন ৩,১৬৫টি টিকিট বিলি করেছিল। ব্রিটিশ আমলে তৈরী সেতুর ভারবহন ক্ষমতা মূল্যায়ন করেনি ওরেভা কোম্পানি।
আদালতে পেশ করা রিপোর্টে সেতু বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলির উল্লেখ রয়েছে -
১) ব্রীজের তারে মরচে ধরেছিল, নোঙরগুলিও ভেঙে গেছে, এমনকি নোঙরগুলোর সাথে তারের সংযোগকারী বোল্টগুলোও যথেষ্ট আলগা ছিল।
২) প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছিল, পুরনো তার দিয়ে তৈরী মেঝে ভার বহন করতে সক্ষম নয়।
৩) নিরাপত্তারক্ষীদের আলাদা করে কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া ছিল না। সেতু দর্শন করার জন্য কতজন দর্শনার্থীকে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে তারও কোনও উল্লেখ ছিল না।
এদিন সেতু বিপর্যয়ের ঘটনার শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবী জানান, ওরেভা গ্রুপের তরফ থেকে যে নিরাপত্তারক্ষী এবং টিকিট সংগ্রাহককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। ভীড় সামলানোর কোনও দক্ষতা নেই। তবে, এই ঘটনায় ওরেভা গ্রুপ, যা অজন্তা ঘড়ি তৈরীর জন্য বিখ্যাত, তাদের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা কোনও শীর্ষ আধিকারিককে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।
জেলাস্তরের সরকারী আবেদনকারী বিজয় মানি সংবাদমাধ্যমে জানান, "ওরেভা গ্রুপ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও দুর্ঘটনার সময় মানুষকে বাঁচানোর জন্য কোনও লাইফগার্ড বা নৌকা রাখেনি।"
গত ৩০ অক্টোবর গুজরাটের মোরবিতে সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ১৪১ জন। মাচ্ছু নদীর উপর অবস্থিত সেতুটিকে কোনও ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই খুলে দেওয়া হয়েছিল। যেখানে চুক্তি অনুসারে সেতুটিকে ৮-১২ মাসের জন্য বন্ধ রাখার কথা ছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন