বকেয়া মাইনে চাওয়ায় এক দলিত যুবককে বেধড়ক মারার অভিযোগ উঠলো গুজরাতের এক বেসরকারি ফার্মের প্রধানের বিরুদ্ধে। মোরবি শহরের রানিবা ইন্ডাস্ট্রিজ নামক একটি ফার্মের মালকিন বিভূতি পটেল ও তাঁর কোম্পানির কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে এফআইআর দায়ের করেছে ২১ বছর বয়সী ওই যুবক। ব্যাপক মারধর, অকথ্য অত্যাচারের পাশাপাশি কোম্পানির মালকিন তাঁকে জুতো মুখে নিয়ে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ। মারধরের ফলে ওই যুবককে মোরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত অক্টোবরে মাত্র ১৬ দিন ফার্ম রানিবা ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড-এ কাজ করেছে ২১ বছরের দলিত যুবক নিলেশ দালসানিয়া। বৃহস্পতিবার দাদা মেহুল ও পড়শি ভাবেশকে নিয়ে সেই ১৬ দিনের বেতন চাইতে কোম্পানির অফিসে যায় নিলেশ। কিন্তু প্রাপ্য টাকা চাওয়ায় কোম্পানির মালকিন বিভূতি, তাঁর ভাই ওম পটেল, ম্যানেজার পরীক্ষিত পটেল ও অন্যান্য চার কর্মচারী নিলেশকে ব্যাপক মারধর করেন বলে অভিযোগ। এরপর বেল্ট দিয়ে মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে লিফটে করে জোর করে বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে আবারও একপ্রস্থ মারধর চলে।
কোম্পানির মালকিন বিভূতি তাকে জুতো চাটতে বাধ্য করেছে বলে জানিয়েছেন নিলেশ। পুলিশের কাছে দায়ের করা এফআইআর-এ তিনি জানিয়েছেন, “বিভূতি পটেল জোর করে তার জুতো আমার মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে তার কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। উনি আমাকে হুমকি দিয়েছেন, যদি আমি রাভাপার রোডের (কোম্পানির অফিসের ঠিকানা) আশপাশে যাওয়ার সাহস করি বা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাই, তাহলে আমাকে খুন করা হবে।” এফআইআর থেকে আরও জানা গিয়েছে, ২ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ওই ফার্মে কাজ করেছিল নিলেশ এবং তাকে মাসিক ১২ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
মোরবি শহরের এসপি প্রতিপালসিনহ জালা এই নিয়ে জানিয়েছেন, “মারধরের পর নিলেশ জিএমইআরএস হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তাঁকে এতটাই নির্মমভাবে মারা হয়েছিল যে হাসপাতালে ভর্তিও থাকতে হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করেছি এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতারের তোড়জোড় করা হচ্ছে।”
দলিত যুবককে মারধর করায় অভিযুক্ত বিভূতি ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে তফশিলি জাতি/উপজাতি আইন ছাড়াও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৫০৪, ৫০৬(২), ১৪৩, ১৪৭, ১৪৯ নং ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন