মোদী ডিগ্রি মামলায় গুজরাট হাইকোর্টের নির্দেশে ফের হোঁচট খেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা সংক্রান্ত কেজরিওয়ালের করা আবেদন আবারও খারিজ করে দিল গুজরাট হাইকোর্ট। গত জুলাই মাসে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে হাইকোর্ট সাড়া দিলেও বৃহস্পতিবার আপ প্রধানের আবেদন একেবারে বাতিল করে দিয়েছেন বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব।
২০১৬ সালে তথ্যের অধিকার আইনের অধীনে কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রী মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে চেয়েছিলেন। সেই সময় সেন্ট্রাল ইনফরমেশন কমিশনের তরফে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়কে মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং সার্টিফিকেট প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত মার্চ মাসে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের করা আবেদন শুনে সেই নির্দেশ বাতিল করে দেয় হাইকোর্ট। আদালতে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, “কারও দায়িত্বজ্ঞানহীন শিশুসুলভ কৌতূহল মেটানোকে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় গণ্য করা যায় না।”
সেই সময় গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে জানান, "এই বিষয়ে কোনও গোপনীয়তা নেই। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে।" কিন্তু হাইকোর্টে একটি রিভিউ পিটিশন জমা দিয়ে বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করার আবেদন করেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। পিটিশনে তিনি জানান, গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সওয়াল করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি সংক্রান্ত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেই পাওয়া যাবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট-সহ কোনও পাবলিক ডোমেইনে প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি নিয়ে কোনও লিখিত প্রমাণ নেই।
ওই মামলায় হাইকোর্টের সেই রায় আবারও বিবেচনা করে দেখার জন্য ফের আবেদন করেছিলেন কেজরিওয়াল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব জানান, “এই মামলায় মূল পিটিশনটিতে অনুমোদন দেওয়া হলেও আবেদনকারী তাঁর আইনি প্রতিকারে হেরে গিয়েছেন। কিন্তু তাও তিনি বারবার পুনরায় বিবেচনা করে দেখার আবেদন করে একটি বিশেষ কারণ অনুসন্ধানের জন্য এমনভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা জনজীবনের উপর ভালো রুচির প্রভাব ফেলবে না।”
বিচারপতি আরও বলেন, “দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আইনের অপব্যবহার করে গোটা বিষয়টিতে জোর করে রাজনীতির রং লাগাতে চাইছেন। তাই আদালতের তরফে তাঁকে যে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, তা একেবারেই যথার্থ নির্দেশ।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন