গুজরাটে দলিত সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনের অংশ হিসাবে, বর্তমানে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নির্দল বিধায়ক জিগনেশ মেভানি সোমবার কচ্ছের রাপার তালুকের অন্যান্য দলিত সদস্যদের সাথে বর্ণু গ্রামের একটি মন্দিরে প্রবেশ করেন।
বর্ণু গ্রামের দলিত বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়ে এদিন রাষ্ট্রীয় দলিত অধিকার মঞ্চর জাতীয় আহ্বায়ক জিগনেশ মেভানি মঞ্চের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মন্দিরে পৌঁছান। মেভানির উপস্থিতিতে মন্দিরের ভিতরে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজনও প্রবেশ করেন।
এদিন মেভানি আইএএনএস-কে জানান, "মন্দিরের দুটি প্রাঙ্গণ রয়েছে। দলিতদের শুধুমাত্র প্রাথমিক অংশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ গর্ভগৃহটি শুধুমাত্র উচ্চবর্ণের জন্য সংরক্ষিত।" মেভানি জানতে চান, "আমার প্রশ্ন, কেন শুধুমাত্র উচ্চবর্ণের প্রতিনিধি ছাড়া প্রতিটি নাগরিককে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না?”
জিগনেশ মেভানি জানান, "কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে, আমরা 'গর্ভগৃহ'-তে প্রবেশ করেছি এবং আচার অনুষ্ঠান করেছি৷ যদিও মন্দির কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে খুবই শীতল ব্যবহার করে। তিনি উপহাস করে বলেন, বিজেপি সদর দপ্তর কমলম-এও আমরা এরকম শীতল ব্যবহার পাই।
মন্দির থেকে বেরিয়ে স্থানীয় বর্ণু গ্রামে গিয়ে মেভানী স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। মেভানি তাদের বলেন, "আমরা এখানে আমাদের শক্তি দেখাতে আসিনি যে আমরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারি। তবে আমরা এখানে এসেছি আপনাদের সাথে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যেতে। আসুন আমরা একে অপরকে নিজেদের মনে করি এবং আমাদের গ্রামবাসীদের জন্য ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখি।"
ভাদগাম আসনের বিধায়ক জিগনেশ মেভানি শনিবার গুজরাটে দলিতদের বিরুদ্ধে অত্যাচার এবং অস্পৃশ্যতার অনুশীলনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। গত ২৬ অক্টোবর কচ্ছের নের গ্রামে এক দলিত পরিবারের ছয় সদস্যকে মন্দিরে প্রবেশের অপরাধে ২০ জনের একটি দল দ্বারা লাঞ্ছিত করার পরে মেভানি এই ঘোষণা করেন।
মেভানি বলেন, "যতক্ষণ পর্যন্ত (দলিতদের উপর) আক্রমণ বা হত্যা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ কাজ করে না। বিজেপি সারা দেশে মন্দিরের নামে রাজনীতি করে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, গুজরাটের কতগুলি রাম মন্দির এবং অন্যান্য মন্দির দলিতদের প্রবেশের অনুমতি দেয় না।"
বিজেপির উদ্দেশ্যে মেভানি বলেন "আপনারা এই বিষয়ে কি করছেন?” উল্লেখ্য প্রায় আড়াই দশক ধরে গুজরাটে ক্ষমতাসীন বিজেপি৷
মেভানি জানান, "অস্পৃশ্যতা আমাদের সমাজের উপর একটি দাগ এবং আমরা একটি সমাজ হিসাবে, একটি জাতি হিসাবে এর জন্য লজ্জিত নই৷ আমি বিজেপিকে বিধানসভায় তিনবার চ্যালেঞ্জ করেছি যে আঠারো হাজারেরও বেশি গ্রামের মধ্যে একটি গ্রামে যেতে এবং সেই গ্রামকে অস্পৃশ্যতা মুক্ত করতে। আমার এই পরামর্শ তারা গ্রহণ করেনি। তারা এই বিভেদ চালিয়ে যেতে চায়।"
মেভানি জানান, শুধুমাত্র কচ্ছ জেলায়, রাপার এবং ভাচাউ তালুকে, প্রায় ১২০০-১৫০০ একর, অর্থাৎ প্রায় ৩০০০ বিঘা তফসিলি জাতি এবং দলিত সম্প্রদায়ের জমি উচ্চ বর্ণের দ্বারা অবৈধভাবে দখল করা হয়েছিল।
"আমরা ইতিমধ্যে গুজরাটে ১০ হাজার একর দলিত জমি চিহ্নিত করেছি, যা দখল করা হয়েছে। আগামী দিনে, আমরা এই জমি উদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এর পাশাপাশি নের ও বর্ণু গ্রামের মতো যে গ্রাম থেকে অভিযোগ আসবে সেখানেই প্রতিবাদ জানাবো।
- with Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন