র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু হল গুজরাট মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার। অভিযোগ, পরিচয় জানার জন্য কলেজের সিনয়ররা তিন ঘন্টা ঠাই দাঁড় করিয়ে রেখেছিল পড়ুয়াটিকে। এরপরই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকে উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। ১৫ জন সিনিয়র ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের পাটন জেলার ধরপুরের জিএমইআরএস মেডিক্যাল কলেজে। সদ্য ডাক্তারি পড়ার জন্য ওই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন ১৮ বছরের অনিল নটবরভাই মেথানিয়া। তিনি সুরেন্দ্রনগরের বাসিন্দা। যা পাটানের কলেজ থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে। তাই হস্টেলে ছিলেন তিনি। অভিযোগ, ওই কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা রাতে কয়েকজন নতুন ছাত্রকে ডেকে পাঠান। তাঁদের তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তারপর জানতে চাওয়া হয় পরিচয়। সেই সময় আচমকা মাথা ঘুরে পড়ে যান অনিল মেথানিয়া।
এরপর ওই যুবককে তড়িঘড়ি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসা শুরুর কিছু সময় পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অনিলের এক সহপাঠী বলেন, ‘শনিবার রাত ১০টা নাগাদ আমাদের প্রথম বর্ষের ১০ জনের বেশি ছাত্রকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে আমাদের ডেকেছিলেন সিনিয়রেরা। এক এক জনকে দুই থেকে তিন ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তার পর নিজের পরিচয় দিতে বলা হয়।’
এই ঘটনায় অনিলের কাকার ছেলে ধর্মেন্দ্র জানান, ‘আমরা কলেজ থেকে একটি ফোন পাই। আমাদের জানানো হয়, অনিল পড়ে গেছে এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যখন আমরা এখানে পৌঁছলাম, জানতে পারি যে তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররা তাকে র্যাগিং করেছিল। আমরা বিচার চাই।‘
এবিষয়ে কলেজের ডিন হার্দিক শাহ জানিয়েছেন, র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। ইতিমধ্যেই কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং টিম ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কলেজের পক্ষ থেকে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার কে কে পান্ডে জানিয়েছেন, মৃত ছাত্রের বাবা অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির কাছ থেকে যত দ্রুত সম্ভব রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। ১৫ জন সিনিয়র ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন