জলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পোস্টকার্ডে চিঠি লিখলেন গুজরাটের ৫০ হাজার মহিলা। যে গণচিঠির পর উত্তর গুজরাটের কর্মবাদ হ্রদ এবং মুক্তেশ্বর বাঁধ ইস্যুটি রবিবার এক আকর্ষণীয় মোড় নিয়েছে। মহিলারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নর্মদা কমান্ড অঞ্চলের অধীনে সমস্ত জলাশয়কে ওই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন৷
করমাবাদ হ্রদ এবং মুক্তেশ্বর বাঁধের জলস্তর নেমে যাওয়ার পরে ভাদগাম বিধানসভা কেন্দ্রের সাধারণ মানুষ গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছেন। এই মুহূর্তে দুই এলাকাতেই তীব্র জলসঙ্কট। নর্মদার জল দিয়ে এই দুই জলাশয় ভরাটের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় জনগণ।
জানা গেছে, নেতাদের নিজেদের মধ্যে বিবাদের কারণে এলাকায় জলের সংকট এক বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। দুই জলাধারই ভাদগাম বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে, যেখানে বর্তমান বিধায়ক জিগনেশ মেভানি। তিনি সম্প্রতি শাসক দলকে লক্ষ্য করে শ্লোগান তুলেছেন, "নো ওয়াটার, নো ভোট"। মেভানির অভিযোগ, শাসক দল নর্মদার জল থেকে এই এলাকাকে বঞ্চিত করছে৷
যদিও মেভানীর আন্দোলনকে রাজনৈতিক কৌশল বলে অভিহিত করে, বিজেপি রাজ্য ইউনিটের সভাপতি সিআর পাটিল জানিয়েছেন, মেভানি জলের সমস্যা তুলছেন, কারণ তিনি বুঝতে পেরেছেন যে আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিনি হারতে চলেছেন। পাতিল প্রশ্ন তোলেন, মেভানি কি সাড়ে চার বছর ঘুমিয়ে ছিলেন এবং কেন তিনি বিষয়টি আগে তুললেন না?
কর্মবাদ ও মুক্তেশ্বর জল আন্দোলন সমিতির নেতা রমেশ প্যাটেল জানিয়েছেন, "এই ইস্যুটি গত দু’ তিন মাসের নয়। এই এলাকার মানুষ গত ৩০ বছর ধরে জলসঙ্কটে ভোগে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ভাদগাম এলাকায় জলের ঘাটতি সম্পর্কে ভালভাবে জানেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েই এই বিষয় উত্থাপিত হয়েছিল।"
তিনি বলেন, ১২৫টি গ্রামের ৫০,০০০ মহিলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে পোস্টকার্ড লিখেছেন। তাঁকে তাঁর পূর্ব প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, "যদি আমার বোনেরা সমস্যায় পড়ে এবং এমনকি আমাকে পোস্টকার্ড লেখে, আমি এই সমস্যার সমাধান করব।"
রমেশ প্যাটেল, যিনি একজন কৃষকও, তিনি আরও জানিয়েছেন, এই গ্রামগুলির বেশিরভাগই বর্ষার উপর নির্ভরশীল এবং এখনও এই অঞ্চল থেকে প্রতি বছর জেলা সমবায়ে ২ হাজার কোটি টাকার দুধ সরবরাহ করা হয়। যদি এই দুটি জলাধার নর্মদার জলে ভরা হয় তবে এই টার্নওভার ১০ হাজার কোটি টাকা ছুঁতে পারে।
যদিও সরকার এই নর্মদা খাল থেকে জল উত্তোলনের খরচ হিসেব করছে। প্যাটেলের অনুমান, এই জলাধারগুলি ভরাট করার জন্য জল উত্তোলনের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হলেও, রাজ্য এক বছরের মধ্যে তা পুনরুদ্ধার করতে পারবে। কারণ এর ফলে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বাড়বে, কৃষির বিকাশ ঘটবে, ট্রাক্টর, ডিজেলের চাহিদা বাড়বে, রাজ্য কর থেকে ভাল আয় করবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন