উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানিতে (Haldwani) রেলের জমি থেকে জবরদখল উচ্ছেদের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India)।
গত ২০ ডিসেম্বর, হলদওয়ানির বনভুলপুরা এলাকায় রেলওয়ের ২৯ একর জমি দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট (Uttarakhand High Court)। আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। সেই মামলার শুনানিতে আজ উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি এস কে কাউল (Justice Sanjay Kishan Kaul) ও বিচারপতি অভয় এস ওকা (Justice Abhay S. Oka)-র ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, 'এই মামলায় একটি মানবিক দিক আছে। কোনও বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া এই এলাকার মানুষদের উচ্ছেদ করা যাবে না।'
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, হলদয়ানির বনভুলপুরা এলাকায় দখলকৃত রেলের জমি থেকে উচ্ছেদের মুখোমুখি হওয়া মানুষজনের কথা বিবেচনায় রেখেই সমাধান করা দরকার।
বিচারপতি কৌল বলেন - 'কিছু সমাধান খুঁজে বের করুন। এটি একটি মানবিক সমস্যা...।' তিনি বলেন, 'দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন পেশার মানুষ এখানে অবস্থান করছে। তাঁদেরও অনেক সমস্যা আছে। তাই, এক ধাক্কায় সব শেষ করা যায় না।'
শুনানির সময় বিচারপতিদের বেঞ্চ জানায় - 'এই সমস্যার দুটি দিক রয়েছে। একটি হল, স্থানীয় মানুষেরা ইজারা দাবি করে। দুই, তারা জানিয়েছে যে ১৯৪৭ সালের পরে সেখানে মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং জমিগুলি নিলাম করা হয়েছিল। তাই, এই সমস্যার একটি বাস্তব সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।'
উত্তরাখণ্ডের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বরিয়া ভাটকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি ওকা। তিনি বলেন, '৫০ বছর ধরে সেখানে মানুষ অবস্থান করছে। যারা নিলামে জমি কিনেছেন, এমন লোকেদের পরিস্থিতি আপনি কীভাবে মোকাবেলা করবেন?'
উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের নির্দেশের পর উচ্ছেদের নোটিশ জারি করে রেল। এজন্য এক সপ্তাহের সময় সীমাও বেঁধে দেয় রেল। তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি কৌল। তিনি রেলের আইনজীবীকে বলেন, 'জমিতে স্থাপনা রয়েছে। সাত দিনের মধ্যে উচ্ছেদের নোটিশ কি আপনি দিতে পারেন?'
একইসঙ্গে, আদালত বলেছে, 'এটা আদৌ রেলের জমি নাকি রাজ্যের, সে বিষয়ে স্পষ্টতা থাকা দরকার। রাতারাতি ৫০ হাজার মানুষ উচ্ছেদ করা যায় না।'
রেলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে অনুযায়ী, হলদওয়ানিতে প্রায় ৪ হাজার ৩৬৫ পরিবার রেলের জমি দখল করে আছেন।
এই মামলায় উত্তরাখণ্ড সরকার এবং রেলকে নোটিশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন রেল ও উত্তরাখণ্ড সরকারকে নোটিশের জবাব দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের শুরুতে, হলদওয়ানির হাজার হাজার বাসিন্দা উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে একটি মোমবাতি মিছিল বের করেন।
তাদের দাবি, এই উচ্ছেদের ফলে তারা গৃহহীন হয়ে যাবেন। তাদের স্কুলগামী শিশুদের ভবিষ্যত ঝুঁকির মুখে পড়বে। এই পদক্ষেপটি বিপুল সংখ্যক মহিলা, শিশু এবং বয়স্কদের প্রভাবিত করবে। এটা অননুমোদিত কলোনি। এবং কিছু পরিবার প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন