উত্তরাখণ্ড পুলিশের পক্ষ থেকে ঘৃণাসূচক মন্তব্যের জেরে ইয়াতি নরসিংহানন্দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হল। কদিন আগে হরিদ্বারে ধর্ম সংসদে তাঁর মন্তব্যের জেরে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিলো। তাঁর মন্তব্যের পর দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। ওইদিনের সভায় ইয়াতি নরসিংহনন্দ বিশ্বজুড়ে সমস্ত জিহাদিদের হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং হিন্দু জাতিকে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বলেন তিনি।
উত্তরাখণ্ড পুলিশের করা এফআইআরে ইয়াতি নরসিংহানন্দ ছাড়াও নাম আছে সাগর সিন্ধু মহারাজের। এছাড়াও সাধ্বী অন্নপূর্ণা, ধরম দাস এবং ওয়াসিম রিজভি তথা জিতেন্দ্র ত্যাগীর নাম। এঁদের সকলের বিরুদ্ধেই সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই সমাবেশের বক্তাদের একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হওয়ার পর গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে এফআইআর দায়ের করে হরিদ্বার পুলিশ। তবে এফআইআরে মাত্র একজনের নাম রয়েছে, যিনি সম্প্রতি মুসলিম থেকে হিন্দু ধর্মে রূপান্তরিত হয়েছেন।
গত ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর হরিদ্বারে 'ধর্ম সংসদ'-এর আয়োজন করেছিলেন একাধিক হিন্দুত্ববাদী নেতা। সমাবেশ থেকে সমস্ত হিন্দু জাতিকে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে 'সাফাই অভিযান' শুরু করার আহ্বান জানানো হয় হিন্দু নেতৃত্বের পক্ষে। যে ঘটনা দেশের সীমা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক স্তরেও। আন্তর্জাতিক টেনিস কিংবদন্তি মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন।
অপর একটি ভিডিওতে স্বামী ধরমরাজ মহারাজকে বলতে দেখা গেছে, "প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যখন সংসদে বলেছিলেন জাতীয় সম্পদের ওপর সংখ্যালঘুদের প্রথম অধিকার, আমি যদি তখন সেখানে উপস্থিত থাকতাম তাঁকে গুলি করে হত্যা করতাম। রিভলবারের ছ'টা গুলিই তাঁর বুকে ঢুকিয়ে দিতাম। আমাদের প্রত্যেকের নাথুরাম গডসে হওয়া উচিত।"
প্রসঙ্গত, এই অনুষ্ঠানে একাধিক বিজেপি নেতাও উপস্থিত ছিলেন, যেমন অশ্বিনী উপাধ্যায়, বিজেপির মহিলা মোর্চা প্রধান উদিতা ত্যাগী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন