ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর শপথ নিলেন হরিয়ানার বিজেপি বিধায়ক অসীম গোয়েল। এর জন্য 'সমস্ত রকম ত্যাগ স্বীকার করারও' শপথ নিয়েছেন তিনি। উগ্র হিন্দুত্ববাদের প্রচার করা বিতর্কিত সাংবাদিক সুরেশ চাভাঙ্কের সাথে মিলিতভাবে এই শপথ নিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক।
রবিবার হরিয়ানার আম্বালা শহরে 'অভিন্ন দেওয়ান বিধি' নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল সামাজিক চেতনা সংগঠন নামক একটি সংস্থা। সেখানে অনেকের সাথে সুদর্শন টিভি চ্যানেলের সম্পাদক সুরেশ চাভাঙ্কে এবং বিজেপি বিধয়াক অসীম গোয়েল উপস্থিত ছিলেন। চাভাঙ্কের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর শপথ নিচ্ছেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমরা হিন্দুস্থানকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর শপথ নিচ্ছি। হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবেই একে এগিয়ে নিয়ে যাবো। এর জন্য যা ত্যাগ স্বীকার করতে হয় করবো। আবশ্যক হলে বলিদান দেব, আবশ্যক হলে বলিদান নেব। কিন্তু যে কোনো মূল্যে আমরা হিন্দুস্তানকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করবোই। আমাদের ভগবান এবং পূর্ব পুরুষরা এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের শক্তি দিন।"
ভিডিওতে দেখা গেছে সুরেশ চাভাঙ্কে যখন এই 'শপথ' নিচ্ছেন তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে হাত বাড়িয়ে এই শব্দগুলো উচ্চারণ করছেন আম্বালার বিজেপি বিধায়ক সহ মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্যরা। দর্শকদেরও শপথ নিতে দেখা গেছে।
এই বিষয়ে এক সংবাদসংস্থা বিধায়ককে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, একজন হিন্দু হিসেবে তিনি গর্বিত। এই মঞ্চে তিনি একজন হিন্দু হিসেবে শপথ নিয়েছেন, বিধায়ক হিসেবে নন।
নিজের নিউজ চ্যানেলের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য পরিচিত সুরেশ চাভাঙ্কে। বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কমপক্ষে তিনটি মামলায় আদালত পুলিশের কাছ থেকে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়েছে। সুরেশ চাভাঙ্কে সবথেকে বেশি পরিচিতি পেয়েছিলেন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে 'ইউপিএসসি জিহাদ' নামের একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে গিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে মুসলিমদের ঢোকানোর 'চক্রান্ত' চলছে অভিযোগ করেন তিনি। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে তীব্র সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বার্তা দিচ্ছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট বাধ্য হয়ে তাঁর এই প্রোগ্রামের সম্প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।
এছাড়াও গত বছরের ডিসেম্বর মাসে একটি সভামঞ্চ থেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে এখনও মামলা চলছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন