দেশে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ক্রমে বাড়ছে। সুস্থ্য পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এটা দ্রুত রদ করা প্রয়োজন। সোমবার, এক জনস্বার্থ মামলার (PIL) শুনানিতে এমনই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট (The Supreme Court)।
মামলাকারী হরপ্রীত মানসুখানি (Harpreet Mansukhani) নিজের আবেদনে অভিযোগ করেন, ‘বর্তমানে ঘৃণামূলক বক্তব্য একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।’
আদালতে তিনি জানান, ‘সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তৃতা দেওয়া হচ্ছে। আর এই অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ভোট জিততে, সমস্ত পদে ক্ষমতা দখল করতে, গণহত্যা সংগঠিত করতে এবং ২০২৪ সালের আগে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার জন্য।’
শুধু তাই নয়, হিন্দি সিনেমা 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' (The Kashmir Files)-এর কথা উল্লেখ করে মামলাকারী বলেন, 'কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জোরপূর্বক দেশত্যাগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যাতে মুসলিম বিদ্বেষকে উস্কে দেওয়া যায়।'
মামলাকারীর এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত ও বিচারপতি এস আর ভাটের বেঞ্চ বলে, ‘হয়তো আপনি ঠিকই বলছেন। বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতার ফলে পুরো পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সম্ভবত আপনার কাছে বলার সমস্ত যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে, যে এটিকে রোধ করা দরকার।’
একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, ‘এই ধরণের ঘটনায় কে জড়িত আর কে জড়িত নয়, তা আমাদের দেখতে হবে। বর্তমানে এই আবেদনে তথ্যের অভাব রয়েছে। বিশেষ অপরাধের বিশদ বিবরণ ও প্রেক্ষিত, এই অপরাধে কারা জড়িত, কোনও অপরাধ রেজিস্ট্রাড হয়েছে কিনা - বিস্তারিত তথ্য পেশ করতে হবে। এ বিষয়ে হলফনামা পেশ করতে হবে ৩১ অক্টোবর। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে পয়লা নভেম্বর।’
এছাড়া, অন্য একটি পৃথক মামলায় - গত বছর রাজধানী এবং হরিদ্বারে হওয়া ধর্মীয় সমাবেশে যে ঘৃণাসূচক বক্তৃতা দেওয়া হয়েছিল এবং যারা এই বক্তৃতা দিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে উত্তরাখণ্ড এবং দিল্লি সরকার, তা জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
সম্প্রতি, দিল্লিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও অন্যন্য কিছু সংগঠনের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য পেশ করা অভিযোগ উঠেছে। আয়োজকদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। তারপরে, শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন