“গত ৩০ বছরে এমন মামলা দেখেনি।“ আর জি কর কাণ্ড নিয়ে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানি ছিল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে হয়েছে এই মামলার শুনানি।
এদিন শুনানিতে আর জি কর কাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শীর্ষ আদালত জানায়, “গত ৩০ বছরে এমন মামলা আগে দেখিনি। বাংলা ফৌজিদারি কার্যবিধি অনুসরণ করছে না।“
শুনানিতে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এফআইআর করতে এতো সময় লাগল কেন সেই প্রসঙ্গ তুলে প্রধান বিচারপতি বলেন, “সকাল সাড়ে ৯টায় দেহ উদ্ধার হয়। আর রাত সাড়ে ১১টায় এফআইআর দায়ের হয়। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে এফআইআর! এটা মানা করা যাচ্ছে না। ১৪ ঘণ্টা দেরিতে এফআইআর দায়ের হল কেন? কেন অধ্যক্ষ এফআইআর দায়ের করতে এলেন না? তাঁকে কি কেউ বাধা দিচ্ছিল? কেন তাঁকে বদলি করে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হল? এই সবের কারণ জানতে চায় আদালত।”
বিচারপতি পারদিওয়ালা ব্বলেন, "অবাক হচ্ছি, ময়নাতদন্তের আগেই বলে দেওয়া হল অস্বাভাবিক মৃত্যু? এটা কী ভাবে সম্ভব? তা হলে ময়না তদন্তের প্রয়োজনই কী ছিল?"
চিকিৎসকদের কাজের ডিউটি নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, "আমি সরকারি হাসপাতালে গিয়েছি। আমার পরিবারের একজন অসুস্থ হয়েছিলেন। আমি সরকারি হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েছিলাম। জানি যে ডাক্তাররা ৩৬ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। প্রায় ৪৮ ঘন্টা ডিউটির পর কারোর শারীরিক বা মানসিক অবস্থা থাকে না, কেউ উত্যক্ত করলে সেটা প্রতিহত করার মতো। এক্ষেত্রে আমি কোনো গুরুতর অপরাধের কথা উল্লেখ করছি না।“
এরপরেই চিকিৎসকদের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার আবেদন জানায় শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, “১৩ দিন ধরে এমসের চিকিৎসকেরা কাজ করছেন না। তাঁদের বলব, দয়া করে কাজে ফিরুন। আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না আমরা তা নিশ্চিত করব।”
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এদিন মামলার তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়ে সিবিআই আদালতকে বলে, ‘‘ঘটনার পাঁচ দিন পরে তদন্ত করতে নেমেছে তারা। তবে তত দিনে সব কিছু বদলে গিয়েছে।’’
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ সেপ্টেম্বর হওয়ার সম্ভাবনা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন