আর্থিক তছরূপের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের মামলায় হস্তক্ষেপ করলো না সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি এম এম সুন্দরেশের বেঞ্চ জানায় সুপ্রিম কোর্টের মতো হাইকোর্টও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই বিষয়ে প্রথমে হাইকোর্টের নির্দেশ জানা প্রয়োজন। এদিনই সোরেনের পাঁচদিনের ইডি হেফাজত দিয়েছে অন্য এক আদলত।
শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশে কার্যত ধাক্কা খেলেন হেমন্ত সোরেন বলাই যায়। তাঁর আর্জি শুনলোই না সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আগে রাঁচি হাইকোর্টে আবেদন জানাতে হবে। হাইকোর্টের এক্তিয়ারকে দেশের শীর্ষ আদালত অতিক্রম করতে পারে না।
সুপ্রিম কোর্টে হেমন্ত সোরেনের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, "একজন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই কারণেই আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। ইডির গ্রেফতারি বেআইনি। আমরা প্রথমেই হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলাম কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে শীর্ষ আদালতে আসি।"
যদিও বিচারপতিরা কপিল সিব্বলের আর্জি খারিজ করে জানান, দেশের একজন সাধারণ মানুষ হোক অথবা মুখ্যমন্ত্রী, সকলের জন্যই বিচার সমান। মুখ্যমন্ত্রী বলে আদালতে বিশেষ সুবিধা পাবেন এমনটা আশা করা যায় না। বিচারপতি খান্না বলেন, "প্রথমত, আদালত সবার জন্য খোলা। দ্বিতীয়ত, উচ্চ আদালতও (হাইকোর্ট) সাংবিধানিক আদালত। আমরা যদি একজনকে এখানে মামলা দায়েরের অনুমতি দিই তাহলে সবাইকে অনুমতি দিতে হবে"।
ইডির গ্রেফতারির বিরুদ্ধে হেমন্ত সোরেনের পক্ষ থেকে সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি শীর্ষ আদালতে আবেদন জানান। তার আগে রাঁচি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন হেমন্ত সোরেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কারণে রাঁচি হাইকোর্ট থেকে মামলাটি তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন হেমন্তের আইনজীবী।
উল্লেখ্য, ৬০০ কোটির জমি কেলেঙ্কারি মামলার সাথে যুক্ত একটি অর্থ পাচার মামলায় বুধবার টানা সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর হেমন্ত সোরেনকে হেফাজতে নেয় ইডি। সোরেন ইডি অফিসারদের আগেই জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই অ্যারেস্ট মেমোতে সই করবেন তিনি। সেই মতো তাঁকে সাথে নিয়েই রাজভবনে যান ইডি অফিসাররা। সেখানে ইস্তফা দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
অন্যদিকে আজই ঝাড়খণ্ডের নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন চম্পাই সোরেন। ৪৩ জন বিধায়কের সমর্থন দেখিয়ে তিনি রাজভবনে শপথ বাক্য পাঠ করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন