ব্যাপক বন্যায় বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশ। আর তার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে রাজ্যের পর্যটন ব্যবস্থায়। চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসের বর্ষায় হিমাচল প্রদেশের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। যার প্রভাবে একধাক্কায় অনেকটাই কমে গিয়েছে পর্যটকদের আসা-যাওয়া। ফলে মার খেয়েছে রাজ্য সরকারের সবচেয়ে বড় আয়ের মাধ্যম।
রাজ্যের পর্যটন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, হিমাচল প্রদেশের বার্ষিক জিডিপির প্রায় ১৪০০০ কোটি টাকা আসে এই পর্যটন শিল্প থেকে। কিন্তু জুলাই ও আগস্ট মাসের বর্ষায় এই শিল্পের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। রাজ্যের সড়ক পরিকাঠামো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হিমাচলপ্রদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমিত কাশ্যপ রবিবার এক সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, “পর্যটন ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই বর্ষায়। শুধুমাত্র উনাও, বিলাসপুর ও কাংড়া জেলার ছয় সতীপীঠে স্মরণার্থীদের আগমন অব্যাহত ছিল।”
কাশ্যপ আরও জানিয়েছেন, “তবে বর্ষার মরশুমের আগে রাজ্যে পর্যটকদের ঢেউ আছড়ে পড়েছিল। ২০২৩ সালের প্রথম ৬ মাসে হিমাচলে প্রায় ১.০৬ কোটি পর্যটক এসেছিলেন, ২০২২ সালে যেখানে সংখ্যাটা ছিল ৮৬.৪ লক্ষ। বর্ষা আসার আগে বেশ ভালোই ব্যবসার মুখ দেখছিল রাজ্যের পর্যটন শিল্প, কিন্তু বর্ষা এসেই সেই লাভে ভাগ বসাল।” পুলিশের তথ্য বলছে, গত আগস্ট মাসের ১৭ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত নবরাত্রি উপলক্ষ্যে প্রায় ৮.২৪ লক্ষ পূণ্যার্থী চিন্তপূর্ণী, ব্রজেশ্বরী, শ্রী নন্দাদেবী, শ্রী বগলামুখীর মন্দির দর্শন করেছেন।
উত্তর ভারতের হিমাচলপ্রদেশের পর্যটন ব্যবস্থা প্রথমবার ক্ষতির মুখ দেখেছিল করোনা অতিমারির সময়। সেবার ব্যবসা প্রায় উঠেই গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় পর ধাপে ধাপে লকডাউন উঠতে শুরু করলে ধীরে ধীরে ভীড় বাড়তে থাকে এই দেবভূমিতে। কিন্তু হোটেল ব্যবসায়ীদের মতে, করোনা অতিমারির প্রভাব এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠেনি রাজ্যের পর্যটন ব্যবস্থা। আর তার মধ্যেই চলতি বর্ষার ক্ষয়-ক্ষতি আরও বড় সমস্যায় ফেলেছে হোটেল ব্যবসায়ীদের। তাই পর্যটকদের আকর্ষণ করতে বর্তমানে নিত্যনতুন ছাড় দিচ্ছে হোটেলগুলি।
সিমলা হোটেল এবং ট্যুরিজম স্টেকহোল্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম কে শেঠ বলেছেন, "সিমলার রাস্তা ফের খোলা হয়েছে। হোটেলগুলি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় সহ আকর্ষণীয় প্যাকেজ অফার করছে। পরিস্থিতি ততটাও খারাপ নয়, যতটা খবরে চিত্রিত করা হয়েছে। আমরা আশা করি অক্টোবরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন