গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির সংস্থায় অংশীদারি আছে সেবি প্রধান মাধবী পুরি বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচের। আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ-এর নতুন এই অভিযোগ ঘিরে আপাতত সরগরম ভারতের রাজনৈতিক মহল। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বুচ দম্পতি। তাঁদের বক্তব্য, এ সবই তাঁদের চরিত্রহননের চেষ্টা। অন্যদিকে হিন্ডেনবার্গ-এর আনা নতুন অভিযোগের পর সোমবার আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন শেয়ারের দাম পড়েছে অনেকটাই।
আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-র প্রধানের যোগাযোগের অভিযোগ তুলে আরও এক নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই ফের এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে এই প্রসঙ্গে বলেন, ১২ আগস্ট পর্যন্ত সংসদের অধিবেশন চলার কথা থাকলেও তা কেন ৯ আগস্ট বিকেলেই মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে তা এখন বোঝা যাচ্ছে।
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে ২০১৭ সালে সেবিতে যোগ দেবার আগে মাধবী বুচের নামে থাকা সমস্ত শেয়ার তাঁর স্বামীর নামে করে দেওয়া হয়। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির বিদেশে থাকা সংস্থায় অংশীদারি রয়েছে সেবি প্রধান এবং তাঁর স্বামীর।
অন্যদিকে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক এই রিপোর্ট প্রকাশের পর হিন্ডেনবার্গ সংস্থাকে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় হেঁটেছে গৌতম আদানির সংস্থা। রবিবার এক বিবৃতিতে সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, এর আগেই হিন্ডেনবার্গ-এর আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছিল এমনকি শীর্ষ আদালতও এই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। এবার আরও একবার কিছু মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সংস্থার সুনাম নষ্ট করতে এটি এক পরিকল্পিত চক্রান্ত। আদানি গোষ্ঠীর নথিভুক্ত বিদেশি সংস্থাগুলির গঠন সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই বিষয়ক যাবতীয় তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়।
এর আগে গত শনিবার হিন্ডেনবার্গ-এর পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন ট্যুইটার) অভিযোগ জানিয়ে বলা হয়, আদানিরা বিদেশে যে টাকা সরিয়েছেন তাতে অংশীদারিত্ব রয়েছে সেবির প্রধানের।
আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে বিতর্কের মাঝেই সোমবার বিজেপির পক্ষ থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ অভিযোগ করেন, কংগ্রেস ভারতের শেয়ার বাজারকে ধ্বংস করতে চায়। তিনি আরও বলেন কংগ্রেস ভারতের বিরুদ্ধে ঘৃণা এবং অর্থনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির ঘটনায় জড়িত।
তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস “ভারতীয় শেয়ার বাজারকে বিপর্যস্ত করতে চায়”। “তৃতীয়বার হেরে যাওয়ার পর (২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে) কংগ্রেস এবং তার ঘনিষ্ঠ ‘টুলকিট’ মিত্ররা এখন ভারতীয় অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করতে চায়। কংগ্রেস আজ ভারতের বিরুদ্ধে ঘৃণা তৈরি করেছে।” “এই প্রতিবেদনটি শনিবার প্রকাশিত হয়েছিল... তারা রবিবার আক্রমণাত্মকভাবে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে যাতে শেয়ার বাজারে এই তথ্য আঘাত করতে পারে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন