কিছুদিন আগেই হিন্দিকে দেশের রাষ্ট্রভাষা করার লক্ষ্যে মোদী সরকারের নয়া পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। এবার সরাসরি কেন্দ্রকে আক্রমণ করলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সরকারি ভাষা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের তীব্র বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তিনি একটি চিঠি মারফত বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়েছেন।
বিজয়নের অভিযোগ, সংসদীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি যদি ইংরেজির বদলে হিন্দিতে পড়ানো শুরু করে, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে চাকরি এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন অনেক শিক্ষার্থী। সূত্রের খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে তিনি বলেছেন, সংবিধানে উল্লিখিত সকল জাতীয় ভাষাকে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে সমমর্যাদা দিতে হবে। আমাদের উচ্চশিক্ষায় বলপূর্বক হিন্দিকে শিক্ষার প্রধান মাধ্যম হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
পাশাপাশি, সংবিধানের অষ্টম তফসিলে বাংলা, তামিল, হিন্দি-সহ ২২টি ভাষার সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। সেই অনুসারে, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অষ্টম তফসিলে থাকা নির্দিষ্ট সমস্ত ভাষায় প্রশ্নপত্র করার প্রস্তাব দিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে নিজস্ব ট্যুইট বার্তায় পিনারাই জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের বলপূর্বক হিন্দি চাপানোর এই পদক্ষেপ ভারতের আদর্শ এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের উপরে আক্রমণ। এই পদক্ষেপ দেশের অভ্যন্তরে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ভারতীয়দের একটি বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এই নিষ্ঠুর পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে অবমাননা করে। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরোধিতা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার প্রসঙ্গে বুধবার পিনারাই বিজয়নের তীব্র সমালোচনা করেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ এবং সরকারি ভাষা সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য হরনাথ সিং যাদব। তাঁর কথায়, যারা হিন্দির বিরোধিতা করছেন, তাঁদের নিশ্চয়ই কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি জানান - স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে আমরা ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি, সেখানে হিন্দিকে যোগাযোগের ভাষা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটি বিধান করার আহ্বান জানানো হয়েছে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী হিন্দির বিরোধিতা করলেও ইংরেজি বজায় রাখতে চান, যা মূলত ব্রিটিশদের ভাষা। এমন বাগাড়ম্বর করে তিনি দেশকে বিভ্রান্ত করছেন। ইংরেজি দাসত্বের ভাষা, তিনি চান এটা জানা হোক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন