'টাকার বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন' মামলায় এবার আরও বিপাকে পড়লেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সম্প্রতি দুবাইয়ের বিখ্যাত ব্যবসায়ী দর্শন হিরানান্দানির থেকে দামি ও বিলাসবহুল উপহারের বিনিময়ে সংসদে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ উঠেছে মহুয়ার বিরুদ্ধে। বিজেপি সাংসদের করা এই অভিযোগের সত্যতা কার্যত স্বীকার করে এই ঘটনায় হলফনামা জারি করলেন দর্শন, যা লোকসভার এথিক্স কমিটি পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মহুয়া যদিও সেইসব দাবি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
সম্প্রতি হলফনামা জারি করে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নিরঞ্জন হিরনান্দানির পুত্র দর্শন দাবি করেছেন, “তৃণমূল সাংসদ মহুয়া খুব ঘন ঘন বহুমূল্য ও বিলাসবহুল সামগ্রীর দাবি করতেন। পাশাপাশি, ছুটি কাটানোর সময়ও বিভিন্নরকমের সাহায্য চাইতেন।” হলফনামায় দর্শন জানিয়েছেন, “মহুয়া মৈত্র খুব তাড়াতাড়ি জাতীয় রাজনীতিতে নাম করতে চেয়েছিলেন। তার বন্ধু এবং উপদেষ্টারা তাঁকে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করাই সাফল্যের সবচেয়ে সোজা রাস্তা।”
দর্শনের দাবি, “মহুয়ার প্রধান উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করা। আর তাই প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গৌতম আদানিকে দিয়েই সেই কাজ শুরু করেন তিনি। আদানি গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিপাকে ফেলার জন্য তিনি একগুচ্ছ প্রশ্নও তৈরি করেন। আমি যাতে তাঁকে তথ্য পাঠাতে পারি, সেজন্য আমাকে তাঁর ব্যক্তিগত ইমেল আইডিও দেন। পরবর্তীতে তিনি তাঁর নিজস্ব সংসদীয় লগ ইন পাসওয়ার্ডও আমায় দেন, যাতে আমি সরাসরি প্রশ্ন পোস্ট করতে পারি।” ওই ব্যবসায়ী তাঁর হলফনামায় আরও দাবি করেছেন, “এই বিষয় নিয়ে মহুয়া ফিনানশিয়াল টাইমস, নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি-সহ একাধিক বিদেশি ও স্বদেশী সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকের সঙ্গেও কথা বলেছেন।”
তৃণমূল সাংসদ দিল্লির সংসদ বাংলো সংস্কার, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার যাবতীয় খরচ চাইতেন বলে দাবি করেছেন ওই ব্যবসায়ী। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ যদিও দর্শনের সমস্ত দাবি-অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন। এক বিবৃতিতে ওই হলফনামার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “দর্শন হিরনান্দানিকে এখনও পর্যন্ত ইডি বা সিবিআই, কেউ ডাকেনি। তাহলে তিনি কাকে দিলেন ওই হলফনামা? শুধুমাত্র কেন্দ্রের বাছাই করা গণমাধ্যমের হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে ওই হলফনামা। সেখানে সাদা কাগজে শুধু দর্শনের সই রয়েছে, কিন্তু বাকি দাবি তিনিই করেছেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে, কারণ কোনও ‘অফিশিয়াল লেটারহে়ড’ বা ‘নোটারি’ করা নেই।” দর্শনকে ‘বন্দুকের সামনে রেখে জোর করে’ ওই হলফনামায় সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন মহুয়া।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন