ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে অমরনাথ তীর্থযাত্রীরা। শুক্রবার (৮ জুলাই) বিকেলে অমরনাথ মন্দিরের গুহার কাছে হঠাৎ শুরু হয় মেঘভাঙা বৃষ্টি। জলে ভেসে যায় তীর্থ যাত্রীদের তাঁবু। ধ্বসও নামে। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি প্রায় ৪০ জন নিখোঁজ হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ির ২ বাসিন্দা।
শুক্রবার বিকেলে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে অমরনাথের গুহার উপর থেকে জলের তীব্র ধারা নামতে শুরু করে। দ্রুত বেগে জল ঢুকতে শুরু করে এলাকায়। ভেসে যায় তীর্থযাত্রীদের অস্থায়ী টেন্টগুলি। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার জেরে অমরনাথ তীর্থযাত্রা স্থগিত করেছে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার।
প্রসঙ্গত, কোভিড সংক্রমণের কারণে, বিগত দু’বছর বন্ধ ছিল অমরনাথ দর্শন। এই বছর ৩০ জুন আবার শুরু হয়েছিল তীর্থযাত্রা। তবে গতকাল থেকে এই বিপর্যয়ের পর তীর্থযাত্রী ও তাঁদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তীর্থযাত্রায় এসে আটকে গেছেন ধূপগুড়ির ছ’জন বাসিন্দা। ছয় জনের মধ্যে সম্প্রতি চারজনের খোঁজ পাওয়া গেলেও ২ জন এখনও নিখোঁজ। জানা গেছে পেশায় ব্যবসায়ী এই ছ’জন ট্রেনে করে অমরনাথ গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা হেটে অমরনাথ গুহা দর্শনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। হঠাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি নামে ওই এলাকায়। শেষ পর্যন্ত চার জন ফিরে আসেন ক্যাম্পে। বাকি দুজনের খবর মেলেনি।
ক্যাম্পে ফিরে আসা ৪ জন জানিয়েছেন, প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে প্রাণ হাতে নিয়ে তাঁরা অসহায়ের মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন। কোনও মতে আজ ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন। বাকি দু’জনের খোঁজে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগযোগ করা হয়েছে।
আটকে পড়েছেন কলকাতার দুই বাসিন্দাও। তাঁরাও এই মুহূর্তে বেস ক্যাম্পে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুর্ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই, শনিবার (৯ জুলাই) কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের তরফে, প্রায় ১৫ হাজারের বেশি তীর্থযাত্রীকে উদ্ধার করা গেছে। উদ্ধার কাজে ভারতীয় সেনা, CRPF, জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী NDRF ও SDRF-এর সদস্যেরা অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন NDRF-এর ডি.জি অতুল করওয়াল।
ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের। ঘটনায় প্রায় ৪০জন নিখোঁজ বলে স্থানীয় প্রশাসন তরফে জানা গেছে। দ্রুত উদ্ধারের জন্য এখনও পর্যন্ত ছ’টি দল নামিয়েছে ভারতীয় সেনা। নামানো হয়েছে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার। উদ্ধার করে তীর্থযাত্রীদের প্রাথমিক ভাবে আনা হয়েছে পঞ্চতরণীর বেসক্যাম্পে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন