আর কদিন পরেই জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের চার বছর পূর্ণ হতে চলেছে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতের ভূস্বর্গ রাজ্যে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে রাজ্যটিকে পৃথক দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়ার হয় কেন্দ্রের তরফে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত চারবছর ধরে দেশের শীর্ষ আদালতে দায়ের হওয়া একাধিক পিটিশনের শুনানি শুরু হয়েছে বুধবার। শুনানি চলাকালীন এদিন সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড় প্রশ্ন করেন, “একটি অস্থায়ী বিধান কীভাবে স্থায়ী হতে পারে?”
সম্প্রতি শীর্ষ আদালতে জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার প্রত্যাহার নিয়ে এক হলফনামা দাখিল করা হয়েছে। সেই হলফনামায় কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, “৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর জম্মু কাশ্মীরে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। দীর্ঘ কয়েকদশক ধরে অশান্ত ভূস্বর্গে শান্তি ফিরেছে। পৃথক প্রশাসন তৈরি করে ওই রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে দমন করা গিয়েছে।”
তবে এই হলফনামা সাংবিধানিক বিষয়ে রায়দানের ক্ষেত্রে বিবেচিত হবে না বলে বুধবার জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। আবার এদিন কেন্দ্রের তরফে আদালতে জানানো হয়, “জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা ছিল।”
এদিকে কেন্দ্রের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে দায়ের করা একগুচ্ছ পিটিশনের শুনানির শুরুতেই এদিন মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, “জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা অস্থায়ীভাবেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু ১৯৫৭ সালে রাজ্যের প্রথম আইন পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা স্থায়ী হয়ে যায়।” কিন্তু সিব্বলের এই কথার সূত্র ধরেই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “কোনও আইন পরিষদ কখনও চিরস্থায়ী হয় না। তাহলে আইন পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাঁর দেওয়া বিধান কী করে স্থায়ী হয়ে যেতে পারে?”
জবাবে সিব্বল জানান, “ওই রাজ্যে ৩৭০ ধারার প্রত্যাহার কোনও সাংবিধানিক পরিবর্তন নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ আসলে রাজনৈতিক। সংসদ নিজেই গণপরিষদের ভূমিকা নিয়ে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে এবং জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁদের উপর এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে বলা হয়, এই বিধান তাঁদের ভালোর জন্যই প্রয়োগ করা হচ্ছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন