হায়দ্রাবাদ গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ৫ জন নাবালক হলেও পুলিশ চেষ্টা করছে যাতে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেই তাদের দেখানো যায়। নাবালক গণ্য করে তাদের যেন লঘু শাস্তি না দেওয়া হয়, তার চেষ্টা করছে পুলিশ।
জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট, ২০১৫ সংশোধনের পরে ১৬-১৮ বছর বয়সী অভিযুক্তদের জন্য এটি একটি "জঘন্য অপরাধ" হিসেবে অনুমোদিত হয়েছে। যার অর্থ হল ধর্ষণ করলে শাস্তি হিসেবে ন্যূনতম সাত বছরের জেল হবে। এ প্রসঙ্গে হায়দ্রাবাদের পুলিশ কমিশনার সি ভি আনন্দ বলেছেন, দোষীদের "সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে" আদালতে আবেদন জানাবে পুলিশ। অন্যথায়, একজন কিশোরকে তিন বছরের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত পাঁচজন নাবালকেরই বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে একজনের ১৮ বছর পূরণ হতে কয়েক মাস বাকী। নাবালকদের মধ্যে তিনজন ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদদের পরিবারের সদস্য।
তবে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট, ২০১৫ সংশোধিত আইনে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তিনটি দিকে নজর দেওয়া হয়। অভিযুক্তকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে বিবেচনা করার ক্ষেত্রে অভিযুক্তের মানসিক এবং শারীরিক ক্ষমতা, অপরাধের পরিণতি বোঝার ক্ষমতা এবং অপরাধ কতটা গুরুতর তা বুঝতে পারার ক্ষমতার দিকে নজর দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে ৫ জন যখন গাড়ির ভিতর নাবালিকাকে ধর্ষণ করছিল, সেই সময় বাকি ১ জন নাবালিকার সাথে যথেষ্ট দুর্ব্যবহার করেছিল। কিন্তু সে ধর্ষণ করেনি।
মিঃ আনন্দ এর আগেই বলেছিলেন, এক্ষেত্রে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর ধারাগুলি প্রয়োগ করার অনুরোধ করা হয়েছে যেখানে শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে হায়দ্রাবাদের একটি পাব থেকে পার্টি করে বাড়ি ফেরার সময় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে জুবিলি হিলস এলাকায় গাড়ির মধ্যে ৫ জন মিলে পালা করে গণধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় POCSO আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তরা কিশোরীটিকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। মেয়েটি তাদের বিশ্বাস করে সেই প্রস্তাবে রাজি হয়। এরপর তারা মেয়েটিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে প্রথমে একটি কেকের দোকানে যায়। এরপর জুবিলি হিলস এলাকায় গিয়ে গাড়ির মধ্যে কিশোরীটিকে গণধর্ষণ করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, পালা করে ধর্ষণ করার সময় গাড়ির বাইরে বাকিরা পাহারা দিচ্ছিল, যাতে গাড়ির ভিতর কী হচ্ছে সেটা বাইরে থেকে বোঝা না যায়।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই পুলিশ ওই কিশোরীর বয়ান রেকর্ড করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন