সংসদের অন্দরে বসেই BSP সাংসদ দানিশ আলিকে ‘উগ্রবাদী, সন্ত্রাসবাদী’ সম্বোধন করায় BJP সাংসদ রমেশ বিধুরিকে নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদের ওই ধর্মীয় হিংসামূলক মন্তব্য নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিধুরির সঙ্গে এবার এই বিতর্কের তালিকায় নাম জুড়ছে আরও এক বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর, ডঃ হর্ষবর্ধন-এর।
নেট মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া যে ভিডিওতে বিধুরিকে ওই আপত্তিকর মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে, সেই ভিডিওতেই বিধুরির মন্তব্য নিয়ে হাসাহাসি করতে দেখা গিয়েছে হর্ষবর্ধনকেও। কিন্তু ঘটনার সাফাই দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, “স্পষ্ট করে কিছুই শুনতে পাইনি।”
বৃহস্পতিবার লোকসভার বিশেষ অধিবেশনে সভা চলাকালীনই বিএসপি সাংসদ দানিশ আলিকে ‘উগ্রবাদী, সন্ত্রাসবাদী’ বলে সম্বোধন করেন দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরি। এমনকি দানিশকে ‘মোল্লা আতঙ্কবাদী' বলেও আক্রমণ করেন বিধুরি।
এরপরেও বসপা সাংসদ তার প্রতিবাদ না থামালে বিধুরিকে বলতে শোনা যায়, “বাইরে বের করুন এই মোল্লাকে”। সংসদের নিয়ম অনুযায়ী সেই অপশব্দসমূহ সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারও করা হয়েছে। পরে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। যদিও সংসদের কার্যবিবরণী থেকে ওই সমস্ত শব্দ বাদ দেওয়া হয়।
ওই ভিডিওতেই দেখা গিয়েছে, বিধুরি তার জায়গায় দাঁড়িয়ে যখন দানিশ আলির উদ্দেশে ধর্মীয় কটূক্তি ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন বিধুরির ঠিক পিছনে বসে তাঁর করা মন্তব্য নিয়ে ক্রমাগত হাসাহাসি করছেন হর্ষবর্ধন। অথচ বিধুরির মন্তব্য বিতর্কের মধ্যে তাকে টানার জন্য টুইটারে অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।
টুইটারে এই ঘটনায় তার হাসাহাসি নিয়ে সাফাই দিয়ে একটি লম্বা পোস্ট করে হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, “দুজন সাংসদের মধ্যে দুর্ভাগ্যজনক এই অসংসদীয় ভাষায় কটূক্তি বিনিময়ের ঘটনা মধ্যে আমাকেও টানা হচ্ছে দেখলাম। এতে আমি অত্যন্ত ব্যথিত ও অপমানিত বোধ করছি। আমি ওই ঘটনার সাক্ষী ছিলাম বটে, কিন্তু ওখানে এত বিশৃঙ্খলা ছিল যে আমি স্পষ্টভাবে কিছুই শুনতে পাইনি।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমার ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি লক্ষ লক্ষ মুসলিম ভাইবোনদের সঙ্গে কাজ করেছি। এমনকি দিল্লির চাঁদনী চকের ঐতিহাসিক গলিঘুঁজিতে আমার জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা। গোটা ছোটবেলা আমি আমার মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধূলা করে বড় হয়েছি। আমি দাবি রেখে বলতে পারি, সমস্ত মুসলিম ভাইবোনরা যারা আমাকে চেনেন, তারা এই বিষয়ে আমার অনুভূতি ও আবেগ সম্পর্কে জানেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার ভাবমূর্তি খারাপ করার জন্য রাজনৈতিক উপাদান দিয়ে মিথ্যা সাজানো গল্প তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে।”
যদিও ভিডিওতে যেখানে বিধুরির মন্তব্য নিয়ে স্পষ্ট হাসাহাসি হর্ষবর্ধনকে হাসাহাসি করতে দেখা গিয়েছে সেখানে তার এই সাফাই খুব একটা কাজে আসেনি। উল্টে নেটিজেনরা তাকে ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা’র পুরস্কারে সম্মানিত করা উচিত বলে জানিয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন