মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিধায়ক গণপত গাইকড়ের বিরুদ্ধে জোটসঙ্গী শিবসেনার (শিন্ডে গোষ্ঠী) এক নেতার উপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠে। এই ঘটনায় রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হলেও কোনো অনুশোচনা নেই অভিযুক্ত বিধায়কের। গ্রেফতার হওয়ার পর এমনই দাবি করেন তিনি। বিধায়কের দাবি, তাঁর সামনে তাঁর ছেলেকে ধরে মারছিলেন সেনা নেতা। সেকারণে আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালান তিনি। ঘটনায় বিজেপি বিধায়ক-সহ আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের দলের নেতা মহেশ গাইকড়ের সঙ্গে থানার মধ্যেই বচসার জেরে গুলি চালান বিজেপি বিধায়ক। ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক সেনা সমর্থক। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রাতে মুখ্যমন্ত্রীর নিজ জেলা থানের উল্লাসনগরের হিল লাইন থানায়।
এরপর এক সংবাদ মাধ্যমে গাইকড় বলেন, "হ্যাঁ, আমি নিজেই গুলি চালিয়েছি। এতে আমার কোনও অনুশোচনা নেই। যদি আমার ছেলেকে থানার ভিতরে পুলিশের সামনে মারধর করা হয়, তাহলে আমি কী করব।“
পাশাপাশি, এদিন তিনি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "শিন্ডে সাহেব, উদ্ধব ঠাকরে সাহেবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি বিজেপির সাথেও বিশ্বাসঘাতকতা করবেন। তিনি আমার কাছে কোটি কোটি টাকার ঋণী। মহারাষ্ট্রকে ভালভাবে পরিচালনা করতে হলে শিন্ডের পদত্যাগ করা উচিত। দেবেন্দ্র ফড়নবিশ (উপ মুখ্যমন্ত্রী) এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটি আমার বিনীত অনুরোধ।”
তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে তথা সাংসদ শ্রীকান্ত শিন্ডের বিরুদ্ধে তাঁর কাজের কৃতিত্ব নিয়ে বোর্ড লাগানোর অভিযোগও করেছেন। তিনি বলেন, "একনাথ শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হলে মহারাষ্ট্রে শুধু অপরাধীদের জন্ম হবে। তিনি আমার মতো একজন ভালো মানুষকে আজ অপরাধী বানিয়েছেন।"
বিধায়ক জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল, কিন্তু শিন্ডের নেতারা তাঁকে মারধর করতে শুরু করে। এর জেরে তাঁদের গুলি করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তিনি থানায় পাঁচ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন বলে জানান।
ঘটনাটির সূত্রপাত একটি জমির প্লটকে নিয়ে যা বিধায়ক ১০ বছর আগে কিনেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, জমিতে কিছু আইনি সমস্যা ছিল। কিন্তু তিনি আদালতে জয় পান। তারপরও মহেশ গাইকড় জোর করে সেই জমি দখল করে নেয়।
এই ঘটনায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারকে টার্গেট করেছে উদ্ধব গোষ্ঠী। দলের মুখপাত্র আনন্দ দুবে বলেন, "একজন বিজেপি বিধায়ক থানার ভিতরে গুলি চালিয়েছিলেন। যে ব্যক্তিকে গুলি করা হয়েছে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। তাঁদের উভয় দলের জোট ক্ষমতায় রয়েছে। এই লোকদের আইনের ভয় নেই? ডবল ইঞ্জিনের রাজ্য সরকার ব্যর্থ হয়েছে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন