মণিপুরের ভয়াবহ জাতিগত দাঙ্গার পর এক বছরের বেশী সময় পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও সেখানে স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। এমনকি এখনও পর্যন্ত সেরাজ্যে পা রাখেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, সোমবার ফের হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরে যান লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। এক বছরে তৃতীয় বারের জন্য উত্তর-পুর্বাঞ্চলের এই রাজ্যে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রাহুল বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাচ্ছি মণিপুরে এসে প্রকৃত পরিস্থিতি দেখুন।“
বরাবর মণিপুর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাহুল গান্ধী সহ অন্যান্য বিরোধীরা। ২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরে কুকি-মেইতেই জাতির সংঘর্ষ শুরুর পরে সেরাজ্যে এই নিয়ে তৃতীয়বার গেলেন রাহুল গান্ধী। প্রথম বার গত বছরের জুন মাসে হিংসায় ঘরছাড়াদের আশ্রয় শিবিরগুলি পরিদর্শনে। দ্বিতীয় বার, চলতি বছরের জানুয়ারিতে, ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ উপলক্ষে। অন্যদিকে, লোকসভা ভোট সমাপ্তের পর এই প্রথম গেলেন তিনি। সদ্য সমাপ্ত লোকসভায় সে রাজ্যের দু’টি লোকসভা আসনই জিতে নিয়েছে কংগ্রেস।
সোমবার আসামের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর শিলচর থেকে মণিপুরের জিরিবাম যান রাহুল। সেখানকার আশ্রয়শিবিরে ঘরছাড়া পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন। দেখা করেন মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষদের সাথে। এরপর মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে যান তিনি।
ইম্ফলে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মণিপুর যাওয়ার আবেদন জানিয়ে রাহুল বলেন, "মণিপুরের জনগণের কথা শুনুন। এখানে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। মণিপুর ভারতীয় ইউনিয়নের একটি গর্বিত রাজ্য। এমনকি কোনও কারণ ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর সফর করা উচিত ছিল। এই বিশাল হিংসার ঘটনায়, আমি প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের মানুষকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য এক বা দুই দিন সময় দেওয়ার অনুরোধ করছি।"
এরপর তিনি মণিপুর নিয়ে বলেন, "সমস্যা শুরু হওয়ার পর থেকে তৃতীয়বার আমি এখানে এসেছি। আমি কিছু উন্নতির আশা করছিলাম। কিন্তু সেই পরিস্থিতি আসতে এখনও অনেকটা সময় লাগবে।“ তিনি আরও বলেন, “হাজার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে, বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। রাজ্য সম্পূর্ণভাবে দুই ভাগে বিভক্ত।"
উল্লেখ্য, মণিপুর হিংসার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২০০ জনেরও বেশি মানুষের। এছাড়া এই হিংসার ঘটনায় ঘরছাড়া হয়ে ত্রাণশিবিরে রয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।
রাহুল তাঁদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আপনাদের শান্তি ফিরিয়ে আনতে কংগ্রেস পার্টি সমান ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।“ এদিন ইম্ফলে গিয়ে মণিপুরের গভর্নর আনুসুইয়া উইকের সাথেও দেখা করেন রাহুল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন