দিল্লির রাজেন্দ্র নগরের এক কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন আইএএস পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে শনিবার সন্ধ্যায়। একমাস আগেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করে ওই সেন্টারের কর্তৃপক্ষ, রাজ্য সরকার এবং দিল্লির পুরসভার কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন এক আইএএস পড়ুয়া। অভিযোগ ছিল, বেসমেন্টকে লাইব্রেরী বা শ্রেণীকক্ষ হিসাবে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে প্রাণ সংসার পর্যন্ত হতে পারে।
জানা গেছে, ওই পড়ুয়ার নাম কিশোর সিং কুশওয়াহ। তিনি ওই কোচিং সেন্টারে আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কারোল বাগের বিল্ডিং বিভাগের কার্যনির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার কুমার মহেন্দ্রকে লেখা ওই চিঠিতে পড়ুয়া লিখেছেন, ‘‘রাও আইএএস কর্তৃপক্ষ কোনও রকম সরকারি অনুমোদন ছাড়াই বেসমেন্টকে ক্লাসরুম এবং লাইব্রেরি হিসাবে ব্যবহার করছে, এতে ছাত্র এবং কর্মীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। এ থেকে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’’
এরপর গত ১৫ জুলাই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখেন কিশোর। তিনি লেখেন, ‘‘স্যার, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দয়া করে কিছু ব্যবস্থা নিন।’’ ২২ জুলাই আরও একটি চিঠি লেখেন কিশোর। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনোরকম পদক্ষেপ করা হয়নি। কিশোরের আক্ষেপ, যদি ব্যবস্থা নেওয়া হত আগে থেকেই, তাহলে কোনো ক্ষতি হত না।
ওই ছাত্র সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘রাজেন্দ্রনগরের সমস্ত বেসমেন্ট লাইব্রেরি বেআইনি। এগুলির কোনও সুরক্ষা ছাড়পত্র নেই। বেসমেন্টের সিঁড়িগুলিও মাত্র তিন-চার ফুট চওড়া। অর্থাৎ যদি কোনও বিপদ হয়, তা হলে সহজে বেরোতেও পারবেন না ভিতরে থাকা ছাত্ররা।’’
উল্লেখ্য, একটানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন গোটা রাজধানী। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যায় রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে আচমকা হু হু করে বৃষ্টির জল ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে জলে ভরে ওঠে বেসমেন্ট, যেখানে কোচিং সেন্টারের লাইব্রেরি ছিল। সেই সময় প্রায় ৩৫ জন পড়ুয়া ওখানে ছিলে। কয়েকজন দ্রুত বাইরে বেরিয়ে এলেও অনেকেই সেখানে আটকে পড়েন। তাঁদের দড়ির মাধ্যমে উপরে টেনে তুলতে হয়। তিন জন পড়ুয়া উঠতে পারেননি। পরে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতেরা হলেন তানিয়া সোনি (২৫), শ্রেয়া যাদব (২৫) এবং নবীন ডেলভিন (২৮)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন