ইন্ডিয়া গেটের সামনে থেকে উল্টানো রাইফেল ও হেলমেটও সরালো মোদী সরকার, সমালোচনায় বিরোধীরা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সকল ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে ইন্ডিয়া গেটে অমর জ্যোতি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
অমর জওয়ান জ্যোতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
অমর জওয়ান জ্যোতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরফাইল ছবি
Published on

এবার ইন্ডিয়া গেটের অমর জওয়ান জ্যোতি থেকে উলটানো রাইফেল ও হেলমেট সরল ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’-এ। গত ২১ জানুয়ারি, প্রথমে অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ শিখা ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’র প্রজ্বলিত অগ্নিশিখার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ইন্ডিয়া গেটের সামনে স্মৃতি হিসাবে পড়েছিল উলটানো রাইফেল ও হেলমেট। তবে শুক্রবার, তাও ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’-এ স্থানান্তর করেছে মোদী সরকার।

২০১৯-এর ২৫ ফেব্রুয়ারি এই ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের তরফে তখন জানানো হয়, স্বাধীনতা-পরবর্তী পর্যায়ে ভারতীয় সেনাদের আত্মবলিদানকে শ্রদ্ধা জানাতেই এই স্মারক তৈরি করা হয়েছে। এর তিন বছরের মাথায় সেখানে ‘অমর জ্যোতি’র সব স্মৃতিই স্থানান্তরিত করেছে কেন্দ্র।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সকল ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে ইন্ডিয়া গেটে অমর জ্যোতি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। একটি স্তম্ভের উপর উল্টানো রাইফেল এবং তার উপর একটি হেলমেট - এটিই ছিল স্মৃতিসৌধ। ১৯৭২ সালের ২৭ জানুয়ারি এই স্মৃতিসৌধ উদ্বোধনের পর থেকে এর সামনে সর্বক্ষণ একটি অগ্নি শিখা জ্বলত। দীর্ঘ ৫০ বছর পর গত জানুয়ারি মাসে তা সরিয়ে ফেলে মোদী সরকার। এবার হেলমেট এবং রাইফেলও সরিয়ে দেওয়া হলো।

জানা যাচ্ছে, শুক্রবার, ইন্ডিয়া গেটের সামনে থেকে উলটানো রাইফেলের স্মারকটি তুলে নিয়ে গিয়ে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে বসানো হয়েছে। সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরমবীর চক্র সম্মানপ্রাপ্ত সেনাদের আবক্ষ মূর্তির মাঝখানে রাখা হয়েছে রাইফেলের স্মারকটিকে। এ বিষয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে, এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে নিহত সেনাদের স্মৃতিসৌধকে জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে, ইন্ডিয়া গেট থকে অমর জ্যোতি স্মারক সরানো নিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, 'এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আমাদের সাহসী সৈন্যদের সম্মান জানাতে যে শিখা প্রজ্বলিত হয়েছিল, তা নিভেয়ে দিয়ে স্মৃতি মুছে ফেলা হচ্ছে।‘ একইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু মানুষ দেশপ্রেম এবং আত্মত্যাগের অর্থই বোঝে না। তাতে কিছু যায় আসে না। তবে, আমরা আবার আমাদের সেনাদের জন্য অমর জওয়ান জ্যোতি জ্বালাবো।‘

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in